চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙলো চুয়াডাঙ্গা। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে জেলা ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
Advertisement
এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। এরআগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) জেলায় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজ বিকেলে চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ এবং দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। অসহ্য গরম অনুভূত হওয়ার কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি। এ পরিস্থিতি থাকবে আরও কয়েকদিন। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
Advertisement
চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি। এ কারণে প্রতিবছর এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে বলেও জানান আবহাওয়া অফিসের এ কর্মকর্তা।
একটানা অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ জেলার মানুষ। ধারাবাহিক তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আর ভোগান্তি নেমে এসেছে। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণীকূলেও।
আরও পড়ুন
চুয়াডাঙ্গায় মধ্যরাতে হঠাৎ বৃষ্টিতে স্বস্তি বৃষ্টির পরও গরম কমেনি চুয়াডাঙ্গায় ইতিহাসের দীর্ঘতম তাপপ্রবাহ বইছে প্রতিদিন মরছে ১ লাখ মুরগি, ক্ষতি ২০ কোটি টাকা ‘দাবদাহ আমাদের দীর্ঘদিনের পরিবেশ দূষণের ফল’মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাতে ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এসময় কালবৈশাখী ঝড়ও হয় এ জেলায়। তারপরও কিন্তু কমেনি গরম। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় মূলত এ অসহ্য গরম অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রার পারদ আরও উঠতে পারে বলে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে বলা হচ্ছে।
Advertisement
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাধারণত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মৃদু তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা যদি ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে, তাহলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে বলা হয় তীব্র বা প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা হয় চরম বা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।
চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার বাসিন্দা ইমরান শেখ বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমের কারণে কিছুই করা যাচ্ছে না। বিকেল হলেই আকাশ ঘন হয়ে আসে। মনে হয় এই বুঝি বৃষ্টি হবে কিন্তু হয় না।’
চা দোকানকার শাহজালাল বলেন, ‘এই গরমে বিক্রি কম। দোকানের বেঞ্জে শুয়ে-বসে মানুষ সময় কাটাচ্ছে।’
এদিকে, দাবদাহের কারণে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে গরমজনিত কারণে আড়াইশর বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এ অবস্থায় অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আউলিয়ার রহমান।
তিনি বলেন, গরমে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে হবে। তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। তাই যতটা সম্ভব ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।
হুসাইন মালিক/এসআর/জিকেএস