ক্যাম্পাস

আবর্জনায় আগুন দিয়ে উধাও কর্মচারী, পুড়লো ২০ তাজা গাছ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবর্জনা পোড়ানোর জন্য দেওয়া আগুনে সবুজ গাছপালা পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুকুর সংলগ্ন বাগানে এ ঘটনা ঘটে। এতে মেহগনি, লেবু ও দেবদারুসহ বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ২০টি গাছ আগুনে পুড়ে যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের পার্শ্বে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা কর্মচারী সত্য রায় আবর্জনা পোড়ানোর জন্য আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আগুন দিয়ে চলে যাওয়ায় বাতাসে আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন করার অংশ হিসেবে এসব আবর্জনা পোড়ানো হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অবহেলার জন্য আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। যা থেকে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। এছাড়াও বর্জ্য আগুনে পোড়ানোর ফলে চারপাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়।

Advertisement

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বুধবারও আবাসিক এলাকাসহ ক্যাম্পাসের আরও বেশ কয়েকটি স্থানে আবর্জনায় আগুন দেওয়া হয়। এতে চারপাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এসব জায়গায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে দেখা গেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে দুপুর বেলায় এসব আগুনের ঘটনায় বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি আবর্জনা পোড়ানোর ফলে ওই জায়গাগুলো আরও দৃষ্টিকটু হয়ে পড়ে। তারা পোড়ানোর পরিবর্তে ভিন্ন পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধু হলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সত্য রায় জাগো নিউজকে বলেন, আমি আবর্জনা পোড়ানোর জন্য আগুন দিয়ে চলে গেছিলাম। পরে বাতাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আমি বিষয়টা বুঝতে পারিনি। পরবর্তীতে সতর্ক থাকবো।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হল সংলগ্ন গাছ পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা তিনদিন গাছে পানি দিতে বলেছি। এরপরেও কোন গাছ মারা গেলে নতুন গাছ লাগাতে বলেছি। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে আবর্জনা পোড়ানো বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টা জানতাম না। আগুন দিয়ে কর্মচারীরর চলে যাওয়া উচিত হয়নি। আমি আমি জানার পরপরই গাছগুলোতে পানি দিতে বলেছি। আমরা তিনদিন নিয়মিত পানি দেব। এরপরেও যদি কোন গাছ মারা যায় সেখানে নতুন করে গাছ লাগানো হবে।

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক বিপুল রায় জাগো নিউজকে বলেন, আগুনে আবর্জনা ও গাছ পোড়ানো পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বড় গাছগুলোর ডালপালা ও পাতা পুড়ে গেলে তারা খাদ্য তৈরী করতে পারে না, এতে গাছগুলো আর পরিপুষ্ট হয় না। এছাড়া একই স্থানে বারবার আগুন দেওয়া হলে সেখানে পরবর্তীতে আর নতুন করে গাছ জন্মাবে না। পরিকল্পিতভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে পারলে পরিবেশও ভালো থাকবে পাশাপাশি এসব ছাই সার হিসেবেও ব্যবহারের সুযোগ থাকবে।

মুনজুরুল ইসলাম/এনআইবি/জিকেএস