জিম্মিদশা থেকে মুক্ত বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের সবাই এমভি আবদুল্লাহতে করেই দেশে ফিরবেন। শুরুতে নাবিকদের দুজন বিমানে দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানালেও দুবাই পৌঁছে তারাও নিজেদের মত পরিবর্তন করেছেন। কয়লা খালাস শেষে নতুন পণ্য নিয়ে আগামী মে মাসের মাঝামাঝি এমভি আবদুল্লাহ দেশে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Advertisement
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শুরুতে নাবিকদের দুজন দুবাই পৌঁছে বিমানে দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল দুবাই বন্দরে জেটিতে জাহাজ ভেড়ার পর ওই নাবিকরা অন্য সহকর্মীদের সঙ্গেই দেশে ফেরার কথা জানিয়েছেন। বর্তমানে জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কার্গো খালাসের কাজ চলছে। এটি শেষ হতে পাঁচ থেকে সাতদিন লাগবে। এর পরে নতুন পণ্য লোড করে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য রওনা হবে। আগামী মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে এমভি আবদুল্লাহকে নিয়ে দেশে পৌঁছাবেন ২৩ নাবিক।
এর আগে এস আর শিপিং লিমিটেড জানিয়েছিল, এরই মধ্যে দুবাই থেকে চট্টগ্রামের কার্গো চূড়ান্ত হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে নাবিকদের ইচ্ছা অনুযায়ী দুজন বিমানে ও বাকি ২১ নাবিক কার্গো নিয়ে জাহাজেই দেশে ফিরবেন।
Advertisement
এস আর শিপিং লিমিটেডের সিইও মেহেরুল করীম বলেন, কয়লা খালাসের পর আবার কার্গো লোড করে চট্টগ্রামে আসার কথা রয়েছে। তবে ওই কার্গোটি এখনো ফাইনাল হয়নি, সম্ভবত হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন
দুবাই বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছালো এমভি আবদুল্লাহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লায় জিম্মি যারাএর আগে গতকাল স্থানীয় সময় ৭টার দিকে দুবাইয়ের আল হামরিয়াহ বন্দরে বার্থিং নিয়ে কয়লা খালাস শুরু করা হয়। এসময় দুবাইয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, কমার্শিয়াল কাউন্সিলর এবং কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া কোম্পানির একটি টিম জাহাজের নাবিকদের স্বাগত জানান এবং খোঁজখবর নেন।
কেএসআরএম গ্রুপের টেকনিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ফয়েজ মো. জুকভ বলেন, জাহাজের সব কিছু ঠিক আছে। কারণ জলদস্যুরা জিম্মিকালীন সময়ে আমাদের জাহাজ রুটিন মেন্টেনেন্সের সুযোগ দিয়েছে। আমাদের একটি টিম সবকিছু দেখভাল করছে।
Advertisement
এর আগে সোমালি দস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পর টানা এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রা শেষে গত রোববার বিকেলে জাহাজটি আল হামরিয়াহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়।
সোমালীয় দস্যুরা গত ১২ মার্চ বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জিম্মি করা হয়। এর ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল জাহাজটি মুক্ত করে দেয় জলদস্যুরা। এর পরই সেটি সোমালিয়া উপকূল থেকে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। জাহাজটি ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পরিবহন করছিল।
মুক্তিপণ পরিশোধের পর ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ৮ মিনিটে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থেকে নেমে যায় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জলদস্যুরা নেমে যাবার পরই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রিত উপকূল থেকে সোমালিয়ার সীমানা পার করে দেয়।
এএজেড/এমএইচআর/এএসএম