তীব্র দাবদাহে সারাদেশের মতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নওগাঁর জনজীবন। হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর ও সর্দিজনিত রোগী। আক্রান্তদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ।
Advertisement
২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চারগুণ রোগী ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সকালে মোট রোগী ভর্তি ছিল ৩০২ জন। এরমধ্যে শিশু রোগী ৫৮ জন। দুপুর পর্যন্ত আরও ১৪ জন যোগ হয়ে মোট শিশু রোগী দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে। এদের অধিকাংশই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের ১৫ শয্যার বিপরীতে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে বারান্দায় শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু রোগীকে মেঝেতে বিছানা পেতেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
দায়িত্বরত নার্সরা বলছেন, তীব্র গরমে গত কয়েকদিনে রোগীর চাপ বেড়েছে। সেবা দিতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। তারপরও তারা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
Advertisement
নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি এলাকার জুঁই আক্তার তার ১০ মাস বয়সী ছেলে আয়ানকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে আমার ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। তিনদিন হলো হাসপাতালে ভর্তি। এখন কিছুটা সুস্থ হলেও হাসপাতালে আরও দুই-তিনদিন থাকতে হবে। তবে ওষুধ ও স্যালাইন বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শহরের কোমাইগাড়ি এলাকার আয়নাল হক তার দেড় বছরের মেয়েকে দুদিন হলো হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে মেয়েটা অসুস্থ। হাসপাতালে আনার পর জানতে পারলাম নিউমোনিয়া হয়েছে।
আয়নাল আরও বলেন, এ গরমে বাচ্চাদের নিয়ে সবাইকে খুব মুশকিলে পড়তে হয়েছে। রোগীর চাপে হাসপাতালে সহজে বেড পাওয়া যাচ্ছে না। তাপমাত্রা না কমা পর্যন্ত স্বস্তি নেই।
২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, হঠাৎ তাপমাত্রা বাড়ায় মানবদেহেও এর প্রভাব পড়ছে। প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি ও জ্বর হচ্ছে। রোগীর চাপ বাড়ায় সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ওষুধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে রোদের মধ্যে ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় ভালো। তবে প্রয়োজনে বের হতে হলে ছাতা মাথায় দেওয়া বা টুপি ব্যবহার করতে হবে। ঢিলেঢালা পোশাক পরিধানের পাশাপাশি বাইরের খাবার না খাওয়া; বিশুদ্ধ পানি পান করা এবং বেশি করে তরল খাবারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের শরীর ঘেমে গেলে তা মুছে দিতে হবে।
বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মশিউর রহমান/আরএইচ/জেআইএম