ঈদের ছুটি শেষে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচক বেড়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
Advertisement
দরপতনের ধারা থেকে দেশের শেয়ারবাজার যে কোনো সময় বেরিয়ে আসতে পারে এমন আভাস গতকাল রোববার (২১ এপ্রিল) দিয়েছিলেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
এবিষয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ইরান-ইসরায়েল ইস্যুর কারণে ঈদের পর শেয়ারবাজারে দরপতন দেখা দেয়। তবে এটা (ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা) যেহেতু আর বাড়ছে না, আমরা আশা করছি শিগগির বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, এখন অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে। বাজারে অনেক স্টক আছে, যেগুলো খুবই আন্ডারভ্যালু। এটা সময়মতো নিজে নিজেই ঘুরে দাঁড়াবে।
Advertisement
ডিবিএ সভাপতি যে আশার বানী শুনিয়েছিলেন, তা সোমবার কিছুটা হলেও সত্য হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ধারাবাহিকভাবে কমে, তার মধ্য থেকে বেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে।
এদিন লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার আভাস পাওয়া যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেন শুরুতে দেখা দেয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে অব্যাহত থাকে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার কারণে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও কমে আসে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৭৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
Advertisement
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭৪ কোটি ৯২ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ২৩ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৩১ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- গোল্ডেন সন, লাভেলো আইসক্রিম, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, বেস্ট হোল্ডিং, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ফু-ওয়াং ফুড এবং ফু-ওয়াং সিরামিক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮১টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এসআইটি/জেআইএম