দেশজুড়ে

গরমে অসুস্থ হচ্ছেন মানুষ, হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি

যশোরে তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী থাকায় ভ্যাপসা গরমে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি ফ্যান ও এসি নষ্ট থাকায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আড়াইশ শয্যার এ হাসপাতালে সোমবার (২২ এপ্রিল) রোগী ভর্তি রয়েছেন ৬৭৯ জন। এরমধ্যে ঠান্ডা-গরমজনিত সর্দিজ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগী রয়েছেন। শিশু রয়েছে ৮৪ জন। তীব্র তাপপ্রবাহে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন।

প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর রোগীদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আরেক বিড়ম্বনায়। হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিনগুণ রোগী থাকায় নতুন রোগীদের ঠাঁই মিলছে মেঝে ও বারান্দায়। বিপুল পরিমাণ রোগী ও তাদের স্বজনদের ভিড়ে হাসপাতালের পরিবেশও নাজুক হয়ে পড়েছে। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে ফ্যান ও এসি নষ্টের যন্ত্রণা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার, বিভিন্ন চিকিৎসকদের চেম্বার, আইসিইউ ও সিসিইউতে মোট ৮৬টি এসি রয়েছে। তবে এর এক-তৃতীয়াংশই নষ্ট। আর ১৭টি ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন কক্ষে ১৬৮টি সিলিং ফ্যান রয়েছে। এরমধ্যে ৩৮টি নষ্ট। ফলে ফ্যানের অভাবে ভ্যাপসা গরমে রোগীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

Advertisement

যশোর সদর উপজেলার বাহাদুরপুর এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন জানান, শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তার মামা রফিকুল ইসলাম গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখানে রোগীর চাপে ও গরমে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

শিশু ওয়ার্ডে রোগীর স্বজন নাজমা আক্তার জানান, প্রচণ্ড গরমে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের কারণে তার ভাইপো রেজাউল ইসলামকে (৯) শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সিট পাননি। ওষুধও নেই। ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। গরমে রোগী-স্বজন সবাই কষ্ট পাচ্ছে।

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাবনুর মির্জা বলেন, ডায়রিয়ার চিকিৎসায় আগে একমাসে যে ওষুধ লাগতো, এখন একদিনেই তা লাগছে। তবে ওষুধ ও স্যালাইন যা আছে তা দিয়ে আগামী প্রায় দুই সপ্তাহ চলবে।

জেলা হাসপাতাল স্বাস্থ্য কমিটির সাবেক সদস্য মোহাম্মাদ খোকন হোসেন জানান, হাসপাতালে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে এসি নিয়ে নিজেদের চেম্বারে লাগিয়েছেন। সেই এসি যদি মেডিসিন সার্জারি ও গাইনি ওয়ার্ডে লাগানো যেতো তাহলে রোগীরা এই গরমে উপকৃত হতেন।

Advertisement

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, মূলত গরমের তীব্রতা বাড়ায় এখন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সঙ্গে সর্দি-জ্বরসহ তাপপ্রবাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছেন।

যশোর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, কিছু ফ্যান ও এসি নষ্ট থাকায় প্রচণ্ড গরমে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে। ১০টি নতুন ফ্যান লাগানো হয়েছে।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম