দেশজুড়ে

মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে আহত

টেকনাফের নাফ নদীতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশি দুই জেলে আহত হয়েছেন।

Advertisement

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে নাফ নদী দিয়ে ফেরার পথে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সাবরাং ইউপির শাহপরীরদ্বীপ ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মন্নান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ জেলেরা শাহপরীর দ্বীপের ছিদ্দিকের ট্রলার নিয়ে সাগরে গিয়েছিল। রোববারদুপুরে নাফ নদী দিয়ে ফেরার পথে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে মিয়ানমার নৌবাহিনী। এতে তারা গুলিবিদ্ধ হন।

Advertisement

গুলিবিদ্ধ জেলেরা হলেন, টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণ পাড়া এলাকার মো. ছিদ্দিকের ছেলে মো. ফারুক (২৫) ও মাঝের পাড়া আলী আহমেদের ছেলে মো. ইসমাইল (২০)।

ট্রলার মাঝি মো. ইউসুফ বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংলগ্ন সাগর থেকে মাছ ধরা শেষে শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফিরছিলাম। এসময় শাহপরীর দ্বীপ নাইক্ষ্যংদিয়া অংশের মিয়ানমারের জলসীমানা দিয়ে দেশটির নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ আমাদের অতিক্রম করছিল। ওই জাহাজ থেকে হঠাৎ আমাদের ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এতে দুইজন জেলে গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা নাফনদীর বাংলাদেশের জলসীমায় ছিলাম এবং হাত উঁচু করে, বাংলাদেশি পতাকা দেখিয়ে তাদের গুলি না করতে ইশারা করেছিলাম। এরপরও তারা মানেনি।

সাবরাং ইউপির শাহপরীরদ্বীপ ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মন্নান বলেন, ফারুকের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে।মো. ইসমাইল গুলিতে সামান্য আহত হন। তাদের টেকনাফ ও কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. সুরাইয়া ইয়াছমিন বলেন, গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ইসমাইল সামান্য আহত হয়েছেন। তাকে টেকনাফে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ফারুকের শরীরের তিনটি গুলি লেগেছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ট্রলারের মালিক শাহ পরীর দ্বীপ মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা ছিদ্দিক বলেন, এফবি মায়ের দোয়া নামে ট্রলারটি ১৮ এপ্রিল সকালে শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে বাংলাদেশ জলসীমানায় মাছ ধরতে যায়। ট্রলারে জেলে ছিলেন ৯ জন। রোববার মাছ নিয়ে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ফিরছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রলারটি বদরমোকাম চ্যানেল অতিক্রম করে নাফ নদীতে ঢোকার সময় মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে অসংখ্য গুলি ছোঁড়া হয়।

ট্রলারে মাঝি মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, কোনো ধরনের সতর্ক সংকেত ছাড়াই মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়া হয়। ফিশিং ট্রলার লক্ষ্য করে ১০-১৫ মিনিটে অন্তত ৫০-৬০ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। গুলি থেকে বাঁচতে ট্রলারের জেলেরা ভেতরে মাছ রাখার একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। এরপরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।

তবে, বিষয়টি সম্পর্কে কোস্টগার্ড কিংবা বিজিবির পক্ষ হতে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। টেকনাফে কর্মরত কোস্ট গার্ড ও বিজিবির সরকারি নম্বরে কল করা হলেও তা রিসিভ হয় না।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওসমান গনি বলেন, বাংলাদেশি দুই জেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছি। তাদের প্রথমে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জেনেছি। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।সায়ীদ আলমগীর/এএইচ/জিকেএস