পেশাদার চোর চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. মিরাজ হোসেন (৩৫), মো.মামুন (৩৪), মো. সায়মুন (৩০), অমিত হাসান ইয়াসিন (২১), বরুন (৫০), হাসিনা বেগম (৫২) ও জামিলা খাতুন হ্যাপি (১৮)।
Advertisement
গ্রেফতার প্রথম চারজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪৭টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে শুধু গ্রেফতার মামুনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ বলছে, ফাঁকা ঢাকায় বাসা-বাড়িতে চুরি করার জন্য চক্রটি তৎপর হয়ে ওঠে। প্রথমে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে বাসা-বাড়ি রেকি করে। রেকি শেষে চোরদের পছন্দমতো একটি বাসা ঠিক করে সেখানে চুরি করে। মূলত টার্গেট করে চুরি করতেন তারা। তাদের টার্গেটে থাকে স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ঈদের এক থেকে দেড় মাস আগে জামিনে বের হন তারা।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি সোনার ছোট আংটি, তিনটি রূপার পায়েল, একটি রিয়েলমি স্মার্টফোন, একটি সোনার নাকফুল, গলানো সোনা যার ওজন তিন ভরি উদ্ধার করা হয়েছে।
Advertisement
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাহাবুব উজ জামান।
তিনি বলেন, ৯ এপ্রিল রাজধানীর পূর্ব ইসলামবাগের বাসিন্দা মো. হাফিজুল ইসলাম পরিবার নিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি যান। ঈদ উদযাপন শেষ করে ১২ এপ্রিল বাসায় প্রবেশ করতে গেলে দেখেন বাসার মূল গেটের হেজবল্টের লক ভাঙা। পরে হাফিজুল বাড়ির মালিককে নিয়ে বাসার মধ্যে প্রবেশ করে দেখেন সব কক্ষের আসবাবপত্র এলোমেলো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে তিনি নিজের বেডরুমে প্রবেশ করে দেখেন স্টিলের আলমারি ভেঙে নগদ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, প্রায় লাখ টাকার স্বর্ণালংকার, ৪০০ ডলার ও একটি স্মার্টফোন চুরি করে নিয়ে গেছে চোর চক্রের সদস্যরা।
পরে ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ডিএমপির চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে চোরদের শনাক্ত করা হয়। পরে শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর ইসলামবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেন, তারা ইসলামবাগের বাসাটিতে চুরি করার আগেও কেরানীগঞ্জের দুটি বাসায় চুরি করেছেন। চুরি করার পর চক্রটি তাঁতীবাজারে গিয়ে সোনা ব্যবসায়ী বরুণের কাছে চোরায় সোনা বিক্রি করে দেন। পরে বরুণ এ চোরাই সোনা গলিয়ে ফেলেন। তাকেও গ্রেফতার করেছি এবং গলিয়ে ফেলা সোনা উদ্ধার করেছি।
Advertisement
লালবাগ বিভাগের ডিসি মাহাবুব উজ জামান আরও বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে চলে যান অনেকেই। আর এ সুযোগে ফাঁকা ঢাকায় বাসা-বাড়িতে চুরি করার জন্য চক্রটি তৎপর হয়ে ওঠে। প্রথমে তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি রেকি করে। রেকি করা শেষ হলে তারা তাদের পছন্দ মতো একটি বাসা ঠিক করে সেখানে চুরি করে। তারা মূলত টার্গেট করে চুরি করে। তাদের টার্গেটে থাকে স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস।
তিনি আরও বলেন, চক্রটির চুরি করাই নেশা ও পেশা। গ্রেফতার জামিলা খাতুন হ্যাপির বাসাটি হচ্ছে এ চক্রের গোপন আস্তানা। সেখানে বসে চক্রটি চুরি করার পরিকল্পনা করে। রেকির পর বাসা নির্ধারণ করে সেই বাসায় চুরি করে তারা। চুরির পর চক্রটির অন্য সদস্যরা হ্যাপির বাসায় কিছুদিন আত্মগোপনে থাকে। তারা ঈদের এক থেকে দেড় মাস আগে জামিনে বের হয়। জামিনে বের হয়ে ঈদের মধ্যে ফাঁকা ঢাকায় চুরি করার জন্য তারা পরিকল্পনা করে ইসলামবাগের বাসাটিতে চুরি করে।
টিটি/এমআইএইচএস/জেআইএম