ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটিয়ে এখনো গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের।
Advertisement
তবে পুরোদমে অফিস-আদালত চললেও ঢাকার ভেতরের সড়কে এখনো তুলনামূলক কিছুটা স্বস্তিতে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপও কম। তবে অনেক এলাকায় গণপরিবহন সংকটে রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অফিসগামীদের।
রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, রামপুরা, বাড্ডা, নতুনবাজার, গুলশান, মহাখালী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
যাত্রী ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের ছুটি গত সপ্তাহে শেষ হলেও অনেকের পরিবারের সদস্যরা দেরিতে ফিরছেন। ফলে এখনো ছুটি কাটিয়ে গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছেন অনেকে। এজন্য দূরপাল্লার বাসে যাত্রীর চাপ রয়েছে।
Advertisement
সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে আসা দূরপাল্লার বাস ও অন্যান্য যানবাহনের চাপ রয়েছে ঢাকার প্রবেশমুখে। এতে কাজলা থেকে শনির আখড়া পর্যন্ত সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। তবে যাত্রাবাড়ী দিয়ে ঢাকার ভেতরে প্রবেশের পর সড়কের অবস্থা স্বাভাবিক। কোথাও তেমন যানজট নেই।
এদিকে, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা, বরিশাল, যশোর, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর থেকে আসা দূরপাল্লার বাস যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদে আসার পর ধীরগতিতে চলছে।
এদিকে, রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটে গণপরিবহন সংকট রয়েছে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে গন্তব্যে যেতে বাসের দেখা পাচ্ছেন না। এতে অফিসগামী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
আরও পড়ুন
Advertisement
অন্যদিকে, রামপুরা থেকে কুড়িল অভিমুখী সড়কে সবসময় যানজট লেগে থাকলে আজ সকালের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ সড়কে কোথাও কোথাও ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করলেও তুলনামূলক কম ভোগান্তিতে চলাচল করতে পারছেন অফিসগামী মানুষ। তবে এটির উল্টো সড়কে অর্থাৎ কুড়িল থেকে রামপুরা যাওয়ার রাস্তায় সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই তীব্র যানজট।
এছাড়া গুলশান-১ থেকে মহাখালী, আগারগাঁও, শিশুমেলা, শ্যামলী যাওয়ার সড়কে তেমন যানজট নেই। স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করছে গণপরিবহনসহ অন্যান্য গাড়ি। ফলে স্বস্তিতে কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছেন যাত্রীরা।
গুলশান-বাড্ডা লিংক রোড থেকে আগারগাঁও যেতে সকালে আলিফ পরিবহনে ওঠেন পলাশ দাস। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। থাকেন মধ্যবাড্ডায়। দীর্ঘদিন এ রুটে গণপরিবহনে চলাচল করছেন।
বাসে বসেই পলাশ দাস জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের ছুটির পর আজ পর্যন্ত স্বস্তিতেই যাতায়াত করতে পারছি। আগে গুলশান-১ চত্বরে দীর্ঘসময় সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। কয়েকদিন হলো ১-২ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। মহাখালীতে ঢুকে টিবি গেট থেকে আমতলী পর্যন্তও জ্যামে পড়তাম। আজ সেটাও দেখলাম নেই। রাস্তা এমন ফাঁকা থাকলে তো ভালোই হয়।’
গুলশান-বাড্ডা লিংক রোডে দায়িত্বরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট আনসার উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না থাকায় সড়কে এখনো তেমন যানজট নেই। শিক্ষার্থীরা চলাচল করলে তাদের সঙ্গে অভিভাবকরাও রাস্তায় বের হন। অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে সন্তানদের স্কুলে পাঠান। তখন রাস্তায় চাপ বাড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার বেশিরভাগ স্কুলই সড়কঘেঁষা। শিক্ষার্থীরা যখন স্কুলে প্রবেশ করে এবং বের হয়, তখন ওই এলাকায় যানজট লেগে যায়। শিশুরা না বুঝে এলোমেলো রাস্তা পারাপার হয়। এটাও যানজটের অন্যতম কারণ।’
এএএইচ/এসএনআর/এমএস