ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে খেপলা জাল হাতে হাজির শতাধিক শৌখিন মৎস্য শিকারি। নির্দেশ পাওয়া মাত্রই একসঙ্গে জাল নিয়ে দিঘির জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন তারা। একে একে সবার জালে উঠতে শুরু করে নানা রকমের মাছ। যেন উৎসবে মাতলেন তারা।
Advertisement
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল গড়ানো পর্যন্ত শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের শুতলকাটি এলাকার ফোরকার পাড় দিঘিতে চলে দিনব্যাপী মাছ ধরা উৎসব। মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দিঘির পাড়জুড়ে নেমেছে দর্শনার্থীর ঢল।
স্থানীয় ও আয়োজকরা জানান, শুতলকাটি এলাকার ফোরকার পাড় দিঘিতে ঐতিহ্যবাহী এ মাছ ধরার উৎসব অন্তত ২০০ বছরের পুরোনো। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের নির্দিষ্ট একটি সময়ে দিঘিটিতে মাছ ধরার উৎসব উদযাপন করা হয়। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শনিবার মাছ ধরার দিন নির্ধারণ করে আয়োজক কমিটি। পাঁচ হাজার টিকিট কেটে মাছ ধরার উৎসবে শামিল হন ১১১ জন জেলে।
সরেজমিন দেখা যায়, জাল হাতে দিঘির বুকে চষে বেড়াচ্ছেন অসংখ্য জেলে। কেউ কেউ মাছ ধরার সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছেন ছোট কাঠের ডিঙি আর কলাগাছ দিয়ে তৈরি ভেলা। খেপলা জাল দিয়ে খেও দেওয়ার পর জালজুড়ে দেখা মিলছে বড় বড় আকারের রুই, কাতলা, তেলাপিয়া মাছ। এসব মাছ ছাড়িয়ে রাখা হচ্ছে পাতিলে।
Advertisement
মাছ ধরা দেখতে গোসাইরহাট থেকে এসেছেন নয়ন দাস। জানতে চাইলে বলেন, ‘মাছ ধরা দেখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। প্রতিবছর এ দিঘিতে জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এবারও মাছ ধরার কথা শুনে ছুটে এসেছি। আমার ভীষণ ভালো লাগছে।’
ডামুড্যা পৌর এলাকার কানাই লাল দাস বলেন, ‘ছোটবেলা বাবার সঙ্গে ফোরকার পাড় দিঘিতে মাছ ধরতে আসতাম। বাবার পর এখন আমি মাছ ধরায় অংশ নিই। জালে যখন বড় বড় মাছ ওঠে তখন আমাদেরও খুশিতে মন ভরে যায়। আজ মোটামুটি ভালো মাছ পেয়েছি।’
জানতে চাইলে আয়োজন কমিটির সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, মাছ ধরার উৎসব আমাদের বাঙালির একটি ঐতিহ্য। আমরা এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে চাই। প্রতিবছর আয়োজনটি অব্যাহত রাখা হবে।
বিধান মজুমদার অনি/এসআর/জেআইএম
Advertisement