দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
Advertisement
এর আগে বেশ কিছুদিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৮ ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত একটানা চারদিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়।
টানা তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলে মানুষ। অতি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। দিনমজুররা দুপুরের আগেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছেন।
চলমান তাপপ্রবাহে সব শ্রেণির মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান।
Advertisement
তিনি বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন। বের হলে সঙ্গে অবশ্যই ছাতা রাখুন। এসময় বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খাওয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:
চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জারিচুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় বাতাসে আদ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। এ নিয়ে টানা চারদিন দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হলো চুয়াডাঙ্গায়।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়া সতর্কবার্তা (হিট অ্যালার্ট) জারি করা হয়েছে।
Advertisement
তীব্র তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য সতর্কতায় নানা নির্দেশনা জানিয়ে তথ্য অফিসের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা এতথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে, গরমে একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে।
জেলা শহরের ব্যাটারিচালিত পাখিভ্যান চালক আজগর হোসেন ও রিকশাচালক লিয়াকত আলী বলেন, প্রচণ্ড গরমে রোজার মাসে যাত্রী পাইনি। আবার সেই গরম শুরু হয়েছে। একেবারেই যাত্রী নেই। সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ার বাসিন্দা লতিফুন নাহার বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে বাচ্চা নিয়ে সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে যে তাপ (তাপমাত্রা) উঠছে তাতে দোকানে বসার অবস্থা নেই। পুরো দোকান দিয়ে মনে হচ্ছে আগুনের ভাপ বের হচ্ছে। এরাম গরমে বেচাবিক্রি ক্যামনে হবে?’
হুসাইন মালিক/এসআর/এএসএম