চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খুঁটি ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বজ্রপাতে তিনটি গরু মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ভোরের দিকে বজ্রপাত, ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। অব্যাহত থাকে প্রায় দেড় ঘণ্টা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে অনেক বাড়িঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে গরমের মধ্যে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ।
রহমতাবাদ এলাকার বাসিন্দা নুরুল হুদা জানান, ভোরে বজ্রপাতে তার এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান, রেজাউল করিম ও আবুল হাসেমের তিনটি গরু বজ্রপাতে মারা যায়। গরুগুলো বাড়ির অদূরে চরে বাঁধা ছিল। সকালে গিয়ে দেখতে পান গরুগুলো মাটিতে পড়ে রয়েছে। গরুগুলোর মূল্য আনুমানিক তিন লাখ টাকা।
Advertisement
পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম বলেন, বেশ কয়েকদিন তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে বাতাসে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় প্রায় ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছি। অনেকবার বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করেছি। এখনো লোকজন আসেনি।
শিলাবৃষ্টিতে ঝরে পড়েছে অনেক গাছের আম। ক্ষতি হয়েছে মিষ্টিকুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন ফসলের। ঘরের চালের টিন ফুটো হয়ে গেছে অনেক বাড়িতে।
কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে থেমে থেমে বড় আকারের শিলা পড়েছে। এসব শিলার কোনোটির ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম পর্যন্ত।
মঘাদিয়া ইউনিয়নের হাসিমনগর এলাকার কৃষক শহীদুল ইসলাম বলেন, ক্ষেতে তোলার উপযোগী ২০ মণের মতো পাকা টমেটো ছিল। আজ ভোরের শিলাবৃষ্টিতে বেশিরভাগ টমেটো নষ্ট হয়ে গেছে।
Advertisement
উপজেলার ওয়াহেদপুর এলাকার বাসিন্দা কাঠমিস্ত্রি লিটন চন্দ্র নাথ বলেন, শিলাবৃষ্টিতে অনেক বাড়িতে ঘরের টিনের চালায় বড় বড় ফুটো তৈরি হয়েছে। সকাল থেকে ঘরের টিন বদলানোর কাজ করতে অনেক বাড়ি থেকে ডাক আসছে।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধান, গ্রীষ্মকালীন সবজি ও ডালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৯৫০ হেক্টর জমির বোরো আক্রান্ত হয়েছে। তারমধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৪৫ হেক্টর জমির ধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, শুধু বৃষ্টি হলে তেমন ক্ষতি হতো না। তবে শিলা পড়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।
বিদ্যুৎ পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহমদের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এম মাঈন উদ্দিন/এসআর/জিকেএস