পহেলা বৈশাখ মানেই মাকসুদের কণ্ঠে ‘মেলায় যাই রে’ গান। সময়ের পরিক্রমায় জনপ্রিয় ব্যান্ড ফিডব্যাকের এই গান নতুন বছর বরণের এক অনুষঙ্গই হয়ে উঠেছে। তবে সম্প্রতি গানটির একটি লাইন পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। বেশ কয়েকজন তরুণকে দেখা গেছে শাহবাগে প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা ব্যান্ড দল ফিডব্যাকের আয়োজনে মাকসুদুল হকের গাওয়া ‘মেলায় যাই রে’ গানটির ‘বখাটে ছেলের ভিড়ে ললনাদের রেহাই নাই’ চরণটির পরিবর্তন দাবি করেছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। এরইমধ্যে নিজের গান নিয়ে মুখ খুলেছেন গানের শিল্পী। মাকসুদ নিজের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন লাইনটি প্রসঙ্গে। সেটি ছড়িয়েও গেছে অনলাইনে। মাকসুদ লিখেছেন, ‘বন্ধুরা। আমি অতন্ত্য বিনয় সহকারে আপনাদের কাছে জানতে চাই ‘বখাটে’ শব্দটা আপনাদের জানা কোনো বাংলা গানে কি এই অব্দি ব্যবহার হতে শুনেছেন? ‘বখাটে’ শব্দ আমরা নিজেরাই বা দিনে কবার ব্যবহার করি? ১৯৮৮তে গানটি লেখার সময় এই শব্দ ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলাম কারণ ভদ্র ভাষায় এই সকল কুলাঙ্গার দানবদের সনাক্ত করতে এর চেয়ে ‘শক্ত গালি’ আমার কাছে ছিল না। এই ‘গালি’ যারা হজম করতে পারছে না তারা এবং কিছু তথাকথিত নব্য ‘প্রগতিশীল’ ‘নারীবাদি’রা এই ফালতু ‘ক্যামপেইন’ করছে কেবলই আমাকে ‘পেইন’ দিতে.... তাতে কোনো লাভ নেই। আমি মোটেও বিচলিত নই। কারণ আমার দেহে এর চেয়ে অনেক ‘শক্ত পেইন কিলার’ আছে এবং সব সময় থাকবে।’তিনি আরো বলেন, ‘তবে হ্যা, সব ‘ছেলে’ বখাটে না এবং ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে এরা (বখাটে) খুব বেশি হলে কয়েক হাজার। এদেরকে সরাসরি চিন্হিত করাই ছিলো আমার উদ্দেশ্য এবং ‘বখাটে’ অর্থ ‘দুষ্ট’ না। ‘দুষ্ট’ বলেও ২০১৫ দুঃখজনক ঘটনার পর এক মহল এদের ‘জায়েজ’ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ‘রাজাকার’ শব্দ কর্তন করে যেমন রাজাকারবিরোধী আন্দোলন সম্ভব না- একইভাবে এই গানটির মেসেজ ‘বখাটে’ বাদ দিয়ে কেবল অনর্থই দাড়াবে।’মাকসুদ আরো লিখেছেন, ‘খুব কষ্ট পেয়েছি এই যাত্রা বাঙালির ‘সৃষ্টিশীলতার’ করুন অবস্থা দেখে। ‘শব্দ/লাইন পরিবর্তন’র দাবি উঠেছে - কিন্তু এর পরিবর্তে কি শব্দ/লাইন হতে পারে তার অত্যন্ত দুর্বল নমুনা এসেছে বহু জায়গা থেকে, বহু ফোরাম থেকে। তাই আমার গানের লাইন অপরিবর্তিত রেখে একটা কাউন্টার ক্যাম্পেইন হতে পারে- ‘ললনারা দৌড়ান দিলে, বখাটেদের রেহাই নাই........’ তবে উপরের শব্দ/লাইনটির সকল ‘মেধাসত্তা অধিকার’ এই অধমের। সবাইকে নববর্ষের অনেক শুভেচ্ছা। মাকসুদুল হক সংগীত শিল্পী/কবি পল্লবী, মিরপুরঢাকাপ্রসঙ্গত, ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে এই গানটি লেখা হয় এবং সুরারোপ করা হয়। কিন্তু ‘মেলায় যাই রে’ গানটি অ্যালবাম হিসেবে বাজারে আসে ১৯৯০ সালের নববর্ষে। এলএ/এবিএস
Advertisement