আইন-আদালত

দ্বীপ উন্নয়ন-কৃষিজমি সুরক্ষা আইন করতে সংসদকে হাইকোর্টের পরামর্শ

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করে দ্রুত দ্বীপ উন্নয়ন আইন প্রণয়নে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া কৃষিজমি, বনভূমি, টিলা, পাহাড় সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন দ্রুত পাস করা আবশ্যক বলে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

রায়ের অনুলিপি দেশের সব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের কাছে পাঠাতে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, জাপান ও ফিনল্যান্ড প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরণ ও সমন্বয় করে আমাদের দেশের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের জন্য দ্বীপ উন্নয়ন আইন দ্রুত প্রণয়নে জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেওয়া হলো।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০২২ সালের ২ জুন দেওয়া একটি মামলার রায়ে এসব পরামর্শ দেন। সম্প্রতি ১৫ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

Advertisement

রায়ে বলা হয়, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর উপরোল্লিখিত ধারা ৪ পর্যালোচনায় এটি পরিষ্কার যে, বিপণন তথা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বীকৃত মতেই আলোচ্য মোকদ্দমায় দরখাস্তকারী বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোনো মাটি উত্তোলন করছেন না।

রায়ে আরও বলা হয়, ফসলি জমিতে পুকুর খননের বিধিনিষেধ আরোপ করে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ খসড়া আইন প্রণয়ন করা হলেও কোনো এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না।

নওগাঁর মো. মিজানুর রহমানকে পুকুর খনন বন্ধ করতে ভূমি অফিসের নোটিশ অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া এ রায়ে বলা হয়, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) মোতাবেক সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কেবল সংসদ প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন-এ বিধি নিষেধ আরোপ করা তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) এর মর্মার্থ। সুতরাং এটি বলা যায় যে, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন সংবিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকার। কোনোভাবেই মৌলিক অধিকার তথা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনে বাধা দেওয়া যাবে না। নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যে কোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন এর অধিকারে পরিবর্তন, বিধি-নিষেধ এবং যে কোনো প্রকারের নিয়ন্ত্রণ কেবল সংসদ প্রণীত আইনের মাধ্যমে করতে হবে।

Advertisement

২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি মোকদ্দমায় নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা দুলাল হোসেন আবেদনকারী ব্যক্তিকে বলেন, তদন্তে দেখা যায়, তিনি ‘মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০’ অমান্য করে পুকুর খনন করছেন।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম