কৃষি ও প্রকৃতি

লেটুস পাতা চাষে সফল শার্শার চাষিরা

লেটুস পাতা চাষে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন যশোরের শার্শার চাষিরা। উপজেলার সদর ও উলাশী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় এ বছর চাষ হয়েছে বিদেশি এই লেটুস পাতা।

Advertisement

শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তরুণ কুমার বালা বলেন, ‘গতানুগতিক অলাভজনক ফসলের চাষ থেকে বেরিয়ে শার্শার কৃষকেরা নিরাপদ উচ্চমূল্যের বিদেশি নতুন নতুন জাতের ফসল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’

উপজেলার পানবুড়ি গ্রামের যদুনাথপুর (হাড়িখালি) ব্লকের কৃষি জমিগুলোয় বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি শাক-সবজির পাশাপশি ২০ শতক জমিতে চাষ হচ্ছে চাইনিজ লেটুস পাতা।

লেটুস পাতা চাষ সম্পর্কে লিপি খাতুন বলেন, ‘লেটুস পাতা চাষের জন্য জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হয়। লেটুস দুইভাবে চাষ করা যায়। সরাসরি বীজ বুনে আবার বীজতলায় বপন করে। উপযুক্ত বয়সের চারা (১ মাস) মূল জমিতে রোপণ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ১২ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ৮ ইঞ্চি রাখতে হবে।’

Advertisement

শার্শা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের ইমদাদুল হক বলেন, ‘এখানে যে লেটুস পাতা চাষ হয়; তা গ্রিন র্যাপিড জাতের। বিদেশি এ পাতা চাষের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এ বীজ ঢাকার সিদ্দিক বাজারে পাওয়া যায়। বীজগুলো চড়া দামে কিনতে হয়। রোপণের এক-দেড় মাসের মধ্যেই খাবারের উপযুক্ত হয়।’

আরও পড়ুন

লালমনিরহাটে কিনোয়া চাষে সফল প্রবাসী রাজু দিনাজপুরে মুখরোচক হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে তুঁত ফল

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিসেস সুলতানা পারভীন বলেন, ‘শীতপ্রধান দেশে সারাবছর লেটুসের চাষ হলেও আমাদের দেশে কেবল রবি মৌসুমে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দফায় দফায় বীজ বোনা যেতে পারে। শার্শায় চাষ শুরু হয়েছে। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে স্থানীয় বাজার তৈরি করতে পারলে চাষিরা ব্যাপক লাভবান হবেন।’

লেটুস চাষি রোকুনুজ্জামান বলেন, ‘স্থানীয় পর্যায়ে এর ব্যবহার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা কম। তাই বিক্রি কিছুটা কম। তবে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, শ্যামবাজার, কারওয়ানবাজারে পিস হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতি পিস ১০-৫০ টাকা হারে বিক্রি করা যায়। এটি চাষে তেমন খরচ নেই। মজুরি, চাষ, সার, কীটনাশক ও আনুষঙ্গিক খরচ আয়ত্তের মধ্যেই থাকে। বারো মাসই চাষের উপযুক্ত বলে এখানে শাক-সবজির পাশাপাশি লেটুস পাতার চাষ বেড়েছে।’

Advertisement

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে নিরাপদ উচ্চমূল্যের সবজি উৎপাদন প্রদর্শনী হিসেবে উপজেলায় ১৩২ শতক জমিতে লেটুস পাতা চাষ হয়েছে। লেটুস চাষে কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কেউ যদি কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা চান, আমরা দিতে আগ্রহী।’

মো. জামাল হোসেন/এসইউ/এএসএম