সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন পরিষদের দুই প্যানেল মেয়রসহ সাতজন কাউন্সিলর। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে এ অনাস্থা প্রস্তাবটি দাখিল করা হয়।
Advertisement
অনাস্থা প্রস্তাবে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, কাউন্সিলর ও জনগণের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ বেশকিছু অভিযোগ উল্লেখ করেন কাউন্সিলররা।
মেয়রের বিরুদ্ধে দাখিল করা অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ রফিক মিয়া, প্যানেল মেয়র-২ সাবিনা বেগম, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজুক মিয়া রাজ্জাক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুর আলী, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামীম আহমদ, ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাসনা বেগম ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লাকী বেগম।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল দুপুরে পৌরসভা কার্যালয়ের কাউন্সিলর হল রুমে প্যানেল মেয়র-১ রফিক মিয়ার সভাপতিত্বে এক বিশেষ জরুরি সভায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’ দাখিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন কাউন্সিলররা। এ সভায় ১০ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
অনাস্থা প্রস্তাবে কাউন্সিলররা উল্লেখ করেন, ‘দুর্নীতি করার সুবিধার্থে পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান পৌরসভার কার্যালয় থেকে সব অফিসিয়াল কাগজপত্র তার বাসভবনে নিয়ে গেছেন। এমনকি পৌরসভা কার্যালয়ের ফার্নিচার-ল্যাপটপ তার বাসভবনে নিয়ে অফিসের সব কর্মচারীদের দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছেন। পৌরসভার মাসিক সাধারণ সভা পৌর কার্যালয়ে না করে তার বাসভবনে করেন। এতে জনগণ সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মুহিবুর রহমান পৌর মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত স্থায়ী কমিটি ও টিএলসিসি কমিটির কোনো সভা করেননি।’
অনাস্থা প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘মেয়র মুহিবুর রহমান পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া একক ক্ষমতাবলে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিজের আত্মীয়-স্বজনকে পৌরসভায় নিয়োগ দিয়ে জনপ্রতি ২-৩ লাখ টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। তাছাড়া মেয়র সরকারের রাজস্ব খাত থেকে বাজেট অনুসরণ না করে বিভিন্ন নামে-বেনামে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে, ডেঙ্গু মশক নিধন ও কোভিড-১৯ নামে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। বিশ্বনাথ পুরান বাজারের গরু-হাটের উন্নয়ন কাজ দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ’তাছাড়া রাজস্ব খাত থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করার ব্যয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগও তোলা হয় অনাস্থা প্রস্তাবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাঁড়া দেননি।
তবে মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী জাহেদ আহমদ বলেন, তিনি এক মাস ধরে মেয়রের সঙ্গে নেই। এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
Advertisement
আহমেদ জামিল/আরএইচ/এমএস