কৃষি ও প্রকৃতি

বৈশাখের প্রথম দিন থেকে ফসল ঘরে তুলছেন কৃষকরা

সুনামগঞ্জের হাওরে বৈশাখের প্রথম দিনে চলছে পাকা ধান কাটার উৎসব। সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মাঠে ছুটছেন। সারাদিন সোনালি ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

Advertisement

সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার করচার হাওরের কৃষক উস্তার আলী। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে পাঁচ একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। সেই ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান ঘরে তোলা নিয়ে ছিল চরম শঙ্কা। তবে সেই শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে বৈশাখের প্রথম দিনে স্বপ্নের ফলানো সেই ধান কেটে মাড়াই দিয়ে প্রখর রোদে শুকাচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে এবার উৎপাদন আর সংগ্রহ ভালো হওয়ায় চোখে মুখে আনন্দ তার।

উস্তার আলী বলেন, ‘২০ হাজার টাকা খরচ করে হাওরে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। সেই ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এমনকি এ বছর ৬০ মণ ধান বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।’

আরও পড়ুন

Advertisement

বিনাচাষে আলু আবাদে লাভ বেশি কৃষকের

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সুনামগঞ্জের ১৩৭টি হাওরে এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তারমধ্যে বৈশাখের প্রথম দিনে এই অঞ্চলের ৩০টি হাওরে লক্ষাধিক কৃষক সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মাথায় গামছা পেচিয়ে ধান কাটতে মাঠে নামেন। একদিকে কৃষকরা ধান কাটছেন অন্যদিকে কৃষাণীরা সেই ধান রোদে শুকাচ্ছেন কেউবা আবার সেই ধান বস্তাবন্দি করে সংরক্ষণ করছেন।

কৃষকরা জানান, বৈশাখের প্রথম দিনে কষ্টের ফলানো সোনালি ধান ঘরে তুলতে পেরে আনন্দিত তারা। এই হাওরকেই ঘিরেই তাদের বৈশাখ। করচার হাওরের কৃষক আমির উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি এই ধান বিক্রি করে ছেলে মেয়ে নিয়ে বছর পার করতে পারব।’

আরেক কৃষক রুহুল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, যেভাবে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়েছিল ধান ঘরে তোলা নিয়ে সত্যি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে এখন আবহাওয়া ভালো আর ধান ও পেকে গেছে তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বৈশাখের প্রথম দিনে ধান কাটতে মাঠে নেমেছি।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। যেখান থেকে এ বছর ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হবে। টাকার অংকে যার বাজারমূল্য ৪ হাজার একশ ১০ কোটি টাকা।

Advertisement

তবে সুনামগঞ্জ কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ধান ঘরে তুলতে কৃষকদের সহযোগিতা ও দূর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।’

এছাড়াও চলতি মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে দেখার হাওরের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষকের ৬০ হেক্টর করে বোরো ধান তলিয়ে যায়। যার বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

মিরসরাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে সূর্যমুখী চাষ কাঁঠালের ফল বা মুচি পচা রোধে করণীয়

কেএসকে/এমএস