ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সামরিক অভিযান আপাতত সমাপ্ত হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করলে আরও বড় আক্রমণ চালাবে তেহরান। আর এই লড়াই কেবলই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার। যুক্তরাষ্ট্রকে এর বাইরে থাকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান সরকার। রোববার (১৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে জাতিসংঘে ইরানের স্থায়ী মিশন।
Advertisement
দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে কয়েকশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। ইসরায়েলের মাটিতে এটিই প্রথমবার ইরানের সরাসরি হামলার ঘটনা। ইরান এই অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ বা ‘সত্য প্রতিশ্রুতির অভিযান’।
আরও পড়ুন>>
ইসরায়েলে হামলা: উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ইরানে মিছিল ইসরায়েলে হামলার নিন্দা জানালেন বাইডেন আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইসরায়েলে হামলা হতো না: ট্রাম্পযদিও ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশই ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসরায়েল ও এর মিত্ররা। তবে প্রতিরোধ দেওয়াল ভেদ করে কিছু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দক্ষিণ ইসরায়েলের নেভাতিম বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে। এতে ‘সামান্য ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ)।
Advertisement
আইডিএফ বলেছে, শনিবার রাতে ইরান, লেবানন, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ৩৫০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছিল। সেগুলোকে আটকে দেওয়ার ঘটনাকে ‘উল্লেখযোগ্য সাফল্য’ বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
শনিবার রাতে হামলা হলেও রোববার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের থেকে ইরানের আক্রমণের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। এক কর্মকর্তা বলেছেন, সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হবে।
Conducted on the strength of Article 51 of the UN Charter pertaining to legitimate defense, Iran’s military action was in response to the Zionist regime’s aggression against our diplomatic premises in Damascus. The matter can be deemed concluded. However, should the Israeli…
— Permanent Mission of I.R.Iran to UN, NY (@Iran_UN) April 13, 2024রোববার ইরানি মিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈধ প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুসারে পরিচালিত ইরানের সামরিক পদক্ষেপ ছিল দামেস্কে আমাদের কূটনৈতিক অবস্থানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকদের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া। বিষয়টি শেষ বলে মনে করা যেতে পারে। তবে, ইসরায়েলি সরকার যদি আরেকবার ভুল করে, তাহলে ইরানের প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি কঠোর হবে। এটি ইরান এবং ইসরায়েলি শাসকদের মধ্যে সংঘাত, যা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে!
Advertisement
আরও পড়ুন>>
আমরা ইরানের সঙ্গে সংঘাত চাই না: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের হামলা, বাইডেনের সঙ্গে কথা বললেন নেতানিয়াহুএকই কথা বলেছেন ইরানি সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ বাঘেরিও। দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভিকে তিনি বলেছেন, ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চাইলে আজকের রাতের সামরিক পদক্ষেপের চেয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া অনেক কঠোর হবে।
এসময় ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে ইরানি কমান্ডার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতিশোধকে যে কোনোভাবে সমর্থন করলে তার ফল ভোগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ানকেএএ/