জাতীয়

‘ছোটবেলা থেকে প্রতিবছর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আসি’

পহেলা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। সকাল ঠিক সাড়ে ১০টা। শাহবাগ মেট্রোরেল স্টেশন থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত সড়কে চলছে না কোনো যানবাহন। সড়ক জুড়ে তখন নানান রঙের মেলা।

Advertisement

সড়কে নেই রিকশা, যান্ত্রিক কোনো যানবাহন, বাস-গাড়ির হর্ন, রিকশার টুংটাং শব্দ। শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতর থেকে ভেসে আসছে লালন সংগীত।

কারও কপালে শুভ নববর্ষ লেখা, আবার কারো কপালে গামছা বাধা। নারীদের খোপায় ফুল। লাল-সাদার মিশেলে পরা শাড়ি। আর লাল-সাদা রঙের পাঞ্জাবিতে বাঙালি পুরুষ জানান দিচ্ছে আজ পয়লা বৈশাখ।

পুরাতন শিশুপার্ক চত্ত্বরে চলছিল ঋষিজ শিল্প গোষ্ঠী আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। নাচ, গান ও আবৃত্তির তালে মোহাচ্ছন্ন হচ্ছিল সব বয়সী মানুষ। সাভার থেকে ভাই-ভাবিকে নিয়ে বর্ষবরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে এসেছেন জেরন চাকমা।

Advertisement

তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরেই আসছি। রোদ-ঝড় ও বৃষ্টিতে যাই হোক না কেন, এখানে আসি। ভালো লাগে। প্রাণের অনুষ্ঠানে সবার সঙ্গে মিশে যাই।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও চারুকলা জুড়ে লাল-সাদা-হলুদের সমাবেশ। দল বেধে আড্ডা, গল্প করা ছবি তোলা, খাওয়া-দাওয়া, কেনাকাটা ও হাঁটা-হাঁটিতে উদযাপিত হচ্ছে প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শেষ মাথায় দেখা গেলে নানা আয়োজন। টিএসসির গেট দিয়ে অনেকেই প্রবেশ করছেন সেই আয়োজনে শরীক হতে।

নাগরদোলা ও বায়স্কোপে শিশুদের ভিড় দেখা যায়। ডুগডুগি, হাতপাখা, কাঁচের চুড়ির পসরা নিয়ে বসেছেন হকাররা। বেলুন ফুটানো, আইসক্রিমের গাড়ির সামনে মানুষ। আছে ফুচকার জন্যও অপেক্ষা। কেউ দেখছেন সাপের খেলা, কেউ আবার বল দিয়ে পানির দিকে নিক্ষেপ করছেন।

Advertisement

উদ্যানের ভেতরে হাড়ি-পাতিল নিয়ে পিকনিক আয়োজন করতে দেখা যায় একটি পরিবারকে। লালন চত্ত্বরে চলছিল গানের আসর। পুরো এলাকা জুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সরব উপস্থিতি। বেশ কয়েকজন বিদেশিরও দেখা মিললো ক্যামেরা হাতে। স্বল্প সংখ্যক তরুণ-তরুণী নববর্ষ উদযাপন করতে বেছে নিয়েছে উদ্যানের নিরিবিলি পরিবেশ। ছবি তোলা, গল্প করা, প্রেম বিনিময়ে কেটে যাচ্ছে তাদের বেলা।

স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরছিলেন আনোয়ারা সাইদ। তিনি বলেন, ঈদে কোথাও বের হইনি। বলেছিলাম বৈশাখের দিন বের হবো। বছরের প্রথম দিনে নানান আয়োজন দেখছি। সারাদিন ঘুরে বিকেলে বাসায় ফিরবো।

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে প্রতিবছর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে আসি। এজন্য আমার মেয়েকে নিয়ে আসলাম। আশা করি সবার নতুন বছর ভালো যাবে।

একতারা ও ডুগডুগি বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, রোদ বেশি। এজন্য মানুষ কম আসছে। দুপুরের পর ভিড় বাড়বে।

এসএম/জেডএইচ/এমএস