রাকিব হোসেন। ২৫ বছর বয়সী বরিশালের এ যুবক এ সময়ে দেশের সেরা ফরোয়ার্ড। বাংলাদেশেরই নন, অনেকের চোখে তিনি সেরা ফরোয়ার্ড দক্ষিণ এশিয়ারও। জাতীয় দলের আর নিজ ক্লাব বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন রাকিব। ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশিদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে স্থানীয়দের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৮ গোল রাকিবের।
Advertisement
প্রতিপক্ষের রক্ষণ চুরমার করে গোল করে এবং করিয়ে নিজেকে নিয়ে তৈরি করেছেন সফল ফরোয়ার্ড হিসেবে। ক্লাব ফুটবলে দেশি এবং বিদেশি প্রতিপক্ষরাই নন, আন্তর্জাতিক ম্যাচের প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররাও তটস্থ থাকেন তার ভয়ে। নিজের ফুটবলে আসা, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিষেক ও আগামীর লক্ষ্যসহ নানা বিষয় নিয়ে রাকিব হোসেন সক্ষাৎকার দিয়েছেন জাগো নিউজকে।
জাগো নিউজ : কেমন আছেন? আপনাকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।রাকিব হোসেন : আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আপনাকেও ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।
জাগো নিউজ : ঈদে নিশ্চয়ই ছুটি কাটাচ্ছেন?রাকিব হোসেন : না না। কোনো ছুটি নেই। গতকালও (বুধবার) অনুশীলন করেছি। আজ ঈদের দিনটাই কেবল মুক্ত। ঈদের পরপরই আমাদের খেলা আছে।
Advertisement
জাগো নিউজ : আপনি তো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এখন পর্যন্ত স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮ গোল করেছেন। আগে কোনো মৌসুমে এত গোল আছে?রাকিব হোসেন : আছে। আমি ২০২১ সালে চট্টগ্রাম আবাহনীর জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগে ৮ গোল করেছিলাম। পরের বছর আবাহনীর জার্সিতে করেছিলাম ৩ গোল এবং বসুন্ধরা কিংসে প্রথম বছর করেছিলাম ৪ গোল।
জাগো নিউজ : দেশের ঘরোয়া ফুটবলে গোলের আলোচনায় থাকেন বিদেশিরা। এখনও শীর্ষে আছেন অতিথি খেলোয়াড়রা। তাদের মাঝে স্থানীয়দের মধ্যে আপনিই উজ্জ্বল। মৌসুম শেষ নামের পাশে কয়টা গোল দেখতে চান?রাকিব হোসেন : সত্যি কথা বলতে কি এই গোল নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথাই নেই। আমি মাঠে নিজের খেলাটাই খেলতে চাই। নিজে করি বা অন্যকে দিয়ে গোল করাই, দল গোল পেলেই হলো। আমার লক্ষ্য থাকে দলকে জেতানো।
জাগো নিউজ : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে একবারই স্থানীয় একজন সর্বাধিক গোলদাতা হয়েছিলেন। এর বাইরে ১০-১৫ গোলের মধ্যেই থেমেছে স্থানীয়দের দৌড়। তাদের ছাড়িয়ে যাওয়ার কোনো লক্ষ্য নেই?রাকিব হোসেন : আবারও বলছি, গোল করার চাপ নিয়ে আমি মাঠে নামি না। সেটা ক্লাব ফুটবলে হোক, কিংবা জাতীয় দলে। আমার লক্ষ্য থাকে পারফরম্যান্স ভালো করা। তাতে গোলের সুযোগ আসবে এবং আমি সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। এভাবেই গোলগুলো হয়েছে। বেশি গোল করতে হবে, কারো রেকর্ড ভাঙতে হবে ওসব মাথায় রাখি না।
জাগো নিউজ : আপনি এ সময়ে দেশের সেরা ফরোয়ার্ড। অনেকের চোখে দক্ষিণ এশিয়ারও সেরা। নিজেকে কোথায় দেখতে চান?রাকিব হোসেন : আমি একজন ভালো পারফরমার হিসেবেই নিজেকে দেখতে চাই। ক্লাব ও দেশের জন্য কতটুকু দিতে পারলাম ম্যাচের পর সেটাই হিসাব করি।
Advertisement
জাগো নিউজ : ফুটবলে কিভাবে এলেন পাঠকদের তা যদি সংক্ষেপে বলতেন।রাকিব হোসেন : বরিশাল সদরে আমার বাড়ি। স্থানীয় কোচ শফিউল আলম স্বপনের কাছে আমার ফুটবলে হাতেখড়ি। ২০১৬ সালে তৃতীয় বিভাগের দল আরাফ স্পোর্টিং ক্লাবের জার্সিতে আমার ঢাকার ফুটবলে অভিষেক। তৃতীয় বিভাগ থেকে ২০১৭-১৮ মৌসুমে সরাসরি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপের দল ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দেই।
জাগো নিউজ : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের কবে অভিষেক হয়েছিল এবং কোন দলের জার্সিতে?রাকিব হোসেন : ভিক্টোরিয়া এসসিতে খেলে পরের মৌসুমেই আমি প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটিতে যোগ দেই। এর পর চট্টগ্রাম আবাহনীতে এক মৌসুম খেলে আবাহনীতে যোগ দেই ২০২১-২২ মৌসুমে। বসুন্ধরা কিংসে আছি ২০২২-২৩ মৌসুম থেকে।
জাগো নিউজ : জাতীয় দলে আপনার গোল আছে চারটি। প্রথম গোল কবে কোন দেশের বিপক্ষে করেছিলেন?রাকিব হোসেন : ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আমার জাতীয় দলে অভিষেক। প্রথম গোল করি ২০২২ সালে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে।
জাগো নিউজ : পরের তিন গোল কবে করেছিলেন কোন দেশের বিপক্ষে?রাকিব হোসেন : পরের তিন গোলের মধ্যে দুটি করেছিলাম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপ ও ভুটানের বিপক্ষে। চতুর্থ গোলটি করেছিল মালদ্বীপের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।
জাগো নিউজ : বসুন্ধরা কিংস টানা চার শিরোপা জিতে রেকর্ড করেছে। পঞ্চম শিরোপা জয়ের পথেও তারা বেশ এগিয়ে। আপনি কতটা আশাবাদী?রাকিব হোসেন : অবশ্যই আশাবাদী। আমরা লিগে এগিয়ে আছি। এটা ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি ফেডারেশন কাপের শিরোপা উদ্ধারেও আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করবো। ব্যক্তিগতভাবে আমি দলের জন্য অবদান রাখতে চাই।
জাগো নিউজ : ধন্যবাদ।রাকিব হোসেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
আরআই/এমএমআর/জেআইএম