দেশজুড়ে

ঈদের আনন্দ নেই জাতীয় দলের প্রয়াত ফুটবলার রাজিয়ার পরিবারে

সদ্য প্রয়াত জাতীয় দলের ফুটবলার রাজিয়াকে ছাড়া এবারের ঈদ শোকের বান ডেকে এনেছে পুরো পরিবারে। মা আমিরুণ বিবির আহাজারিতে এখনো লক্ষ্মীনাথপুরের চারপাশ ভারী হয়ে উঠছে। তবে বাফুফে (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) থেকে ন্যূনতম কোনো অনুদান বা সমবেদনা না জানানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজিয়ার পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

পরিবারসূত্রে জানা যায়, কালিগঞ্জের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের মৃত নূরালী সরদারের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে রাজিয়া সুলতানা সবার ছোট। কালিগঞ্জের উপাকুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াকালিন মাত্র ১১ বছর বয়সে বঙ্গমাতা ফজিতালুন্নেছা ফুটবল টিমে খেলার সুবাদে রাজিয়ার সুখ্যাতি বাড়ে। পরবর্তীতে কুশুলিয়া কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় অনুর্ধ্ব-১৫ দলে ডাক পান তিনি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে।

২০২০ সালে আরেক খেলোয়াড় চট্টগ্রামের কাপ্তাই এলাকার ইয়াম রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সন্তান ধারণের জন্য বেশ কিছুদিন খেলা থেকে দূরে থাকেন রাজিয়া।

গত ১৩ মার্চ বুধবার রাত ১০টার দিকে লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামে বাবার বাড়িতে তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। ফিটনেস ধরে রাখতে সিজার করতে রাজি ছিলেন না তিনি। স্বাভাবিকভাবে ছেলে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে মারা যান তিনি।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজিয়ার ছেলের নাম রাখা হয়েছে রাজিম রহমান। তার বয়স এখন এক মাস ছুঁই ছুঁই। সে এখন চট্টগ্রামের কাপ্তাইয়ে দাদি রোকেয়া খাতুনের কাছে প্রতিপালিত হচ্ছে। আর রাজিয়ার স্বামী ইয়াম রহমান সোমবার কালিগঞ্জে এসেছেন স্ত্রীর কবর জিয়ারত ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঈদ করতে।

রাজিয়ার বড় ভাই ফজলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, রাজিয়ার মৃত্যুর পর এমনিতেই আমরা হতবিহ্বল। কিন্তু দুঃখ লাগে যে ফুটবলের জন্য সে তার জীবনটা উৎসর্গ করেছিল, তার মৃত্যুর পর একটি পয়সা দিয়েও কেউ রাজিয়ার পরিবারকে সাহায্য করেনি।

রাজিয়ার স্বামী ইয়াম রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের সন্তানকে আমার মা মানুষ করছেন। কাপ্তাইয়ে আমাদের বাড়িতে রেখে তাকে লালন-পালন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে সাতক্ষীরা অনেক পথ বলে ছেলেকে আনা সম্ভব হয়নি। আমি এসেছি রাজিয়ার কবর জিয়ারতসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। তবে রাজিয়াকে ছাড়া এবারের ঈদ আমার কাছে আনন্দের চেয়ে বেশি কষ্টের।

কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাশ জাগো নিউজকে বলেন, রাজিয়ার পরিবারকে সরকারিভাবে কোনো আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়নি। তবে আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম সমবেদনা জানাতে। সরকারি নির্দেশনা পেলে তার পরিবারের জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে।

Advertisement

আহসানুর রহমান রাজীব/এফএ/এএসএম