লক্ষীপুরের কমলনগরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খাল দখল করে পাকা দোকানঘর নির্মাণের মহোৎসব চলছে। উপজেলার লরেন্স বাজার সংলগ্ন খালের পাঁচ হাজারের বেশি ফুট দখল করে ৩০টি স্থায়ী ভবন নির্মাণের এ মহোৎসবে মেতে উঠেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে করে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ওই এলাকার কয়েক হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।এদিকে, অভিযোগ উঠেছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পাউবো’র কর্মকর্তারা ‘ম্যানেজ’ হয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ওই খাল বন্দোবস্ত দিয়ে এ দখলের মহোৎসবে প্রভাবশালীদের সহযোগিতা করছেন।সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লরেন্স বাজারের পূর্ব গলি সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালটির প্রায় পাঁচ হাজার ফুট দখল করে কমপক্ষে ৩০টি পাকা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ইতোমধ্যে ওইসব ভবনের প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় অর্ধশত বছরের পুরোনা ওই খালটির বিশাল অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ওই এলাকার ফসলি জমিতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বর্ষার সময় স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ওই এলাকার কয়েক হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, খাল দখলকারী ওইসব ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা এ দখলের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আন্নেগো কাছে কইলেও কী লাভ, আন্নেরা কিছু কইত্তেন হারবেন না। কারণ, অফিসাররা (পাউবো কর্মকর্তা) হেতাগো (দখলদারদের) পক্ষে।পানি নিষ্কাশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ওই খালটি বন্দোবস্ত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্ভেয়ার জসিম উদ্দিন জানান, ওই এলাকার জহির উদ্দিন টিটু, শাহীন আলম, বোরহান উদ্দিন ও সফিসহ ৩২ জন ব্যক্তিকে খালের পাশের ৪৫৬ ফুট জমি শর্ত সাপেক্ষে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের জন্য বরাদ্দ নেওয়া খালের ওই অংশে স্থায়ী স্থাপনা বা পাকা ভবন নির্মাণ করা যাবে না বলে শর্তে উল্লেখসহ তাদেরকে টিন শেডের ঘর নির্মাণের জন্য চুক্তিতে বলা হয়েছে।লক্ষীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এটিএম খালেকুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বন্দোবস্ত নিয়ে অতিরিক্ত দখল ও স্থায়ী ভবন নির্মাণের বিষয়টি তিনি সরেজমিন গিয়ে সত্যতা পেয়েছেন। ওইসব দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি তিনি লিখিত আবেদন করেছেন বলে দাবি করেন।
Advertisement