আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে শহরের বিভিন্ন মার্কেটে কেনাকাটা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পুরোদমে চলছে বেচাকেনা। তবে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় ঈদবাজার করতে গিয়ে নাজেহাল চুয়াডাঙ্গাবাসী। এরমধ্যে পোশাকের দাম অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
Advertisement
ক্রেতাদের অভিযোগ, পছন্দের পণ্যে ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের যুক্তি, ডলার সংকটসহ নানা কারণে এ বছর বেড়েছে পণ্যের দাম।
চুয়াডাঙ্গা শহরের সমবায় নিউ মার্কেট, আব্দুল্লাহ সিটি, প্রিন্স প্লাজা ও পুরাতন গলির মার্কেটে সরোজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে দেশি বিদেশি বাহারি রকমের পোশাক, জুতা ও প্রসাধনী কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা। শেষ মুহূর্তে যেন কেনাবেচার ধুম পড়েছে। তবে এবার দেশি পোশাকের প্রতি আকর্ষণ কম। বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানি বিভিন্ন পণ্য নজর কাড়ছে ক্রেতা সাধারণের। তাই এমন সব বাহারি রকমের পোশাক ও অন্যান্য পণ্যের দামটাও অনেক বাড়তি। যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম কেনাকাটা করছেন আবার অনেকেই পছন্দের পণ্য না কিনেই বাড়ি ফিরছেন।
চুয়াডাঙ্গা শহরের আব্দুল্লাহ সিটি মার্কেটে ঈদ বাজার করতে আসা রনি বিশ্বাস বলেন, নিজের জন্য পোশাক কিনতে এসেছি। তবে দাম অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি। তবুও উপায়তো নেই, ঈদে নতুন পোশাক পরতেতো হবে। হাতে আর সময় নেই তাই যা যা কেনার এখনই কিনে নিচ্ছি।
Advertisement
সমবায় নিউ মার্কেটে ঈদ বাজার করতে আসা নুসরাত বলেন, এবার ঈদে নারীদের জন্য বিশেষ রকমের থ্রি-পিচ নেই। তবে ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি থ্রি-পিচগুলোই চোখে পড়ছে। বলা যায় সুতি কাপড় ও জর্জেটের মিশেলে বাহারি রঙ নজর কাড়ছে। আনন্দের সঙ্গে কেনাকাটা করছি। কিন্তু গত বছরের তুলনায় দামও বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গার সমবায় নিউ মার্কেট পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাহফুজুর রহমান জোয়ার্দ্দার মিজাইল জানান, গতবারের থেকে এবার সব ধরনের পোশাকের দাম বেশি। কারণ একদিকে ডলার সংকট অন্যদিকে কাঁচামালের ঊর্ধ্বগতি। দেশীয় পণ্যের তুলনায় বিদেশি পণ্যের চাহিদা বেশি। তাই দামও বাড়তি। তবে শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিদিনই একেকটি দোকানে দেড় থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা বেচা বিক্রি হচ্ছে। যদিও এবার ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে দেরিতে। তাই ব্যবসায়ীদের আশা, শেষ কয়দিনে বাণিজ্য জমজমাট হয়ে উঠবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ জানান, দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন বিক্রেতাদের জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। বাজার মনিটরিং চলমান আছে। ক্রেতারা যেন প্রতারণার শিকার না হন সে বিষয়ে নজরদারি রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, চুয়াডাঙ্গার প্রতিটা শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে যাতে কোনো ধরনের চুরি, ছিনতাইয়ের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য তল্লাশি চৌকি ও চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আর নিয়মিত পুলিশি টহল চলছে।
Advertisement
হুসাইন মালিক/এফএ/জেআইএম