জাতীয়

বাড্ডায় জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা

ঈদের আর মাত্র দু-তিন দিন বাকি। তাই রাজধানীর ছোট-বড় সব মার্কেট, শপিংমল ও বিপণি বিতানে চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। গত কয়েকদিনের তুলনায় সবখানে ক্রেতার ভিড় বেড়েছে। বেচাবিক্রিও চলছে হরদম। রোববার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানী বাড্ডা এলাকার সুবাস্তু নজর ভ্যালি মার্কেট, উত্তর বাড্ডার হল্যান্ড মার্কেট ও শাহজাদপুরের কনফিডেন্স শপিংমল ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

Advertisement

ঢাকার বাসিন্দাদের অনেকে গত কয়েকদিন কেনাকাটার সুযোগ পাননি। তারা অপেক্ষায় ছিলেন ঈদের আগ মুহূর্তের দিনগুলোর জন্য। এরই মধ্যে একটি অংশ ঢাকায় কেনাকাটা করে ছুটছেন বাড়ির পথে। আবার কর্মজীবীদের অনেকে ব্যস্ততার ফাঁকে শেষ দিকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়েছেন ঈদের কেনাকাটা করতে।

এদিন বাড্ডার সুবাস্তু নজর ভ্যালির সামনের ফুটপাতে অর্ধশতাধিক অস্থায়ী ভ্যান চোখে পড়েছে। বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম সেখানকার পুরো এলাকা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়ে ওই এলাকার সড়কেও দেখা দেয় যানজট। ফলে গাড়িগুলোকে অনেকেটা ধীর গতিতে ওই এলাকা পার হতে দেখা যায়।

আরও পড়ুন

Advertisement

মানুষের কেনার ইচ্ছে আছে, কিন্তু সামর্থ্যে কুলাচ্ছে না পোশাকের পর জমে উঠেছে জুতা, বেল্ট বেচাকেনা

বিকেলে বাড্ডার সুবাস্তু নজর ভ্যালি মার্কেট, উত্তর বাড্ডার হল্যান্ড মার্কেট ও শাহজাদপুরের কনফিডেন্স শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, ছেলেদের কাপড়ের দোকান ও ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে ভিড় বেশি। শিশু আইটেমের দোকানেও ছিল ক্রেতার বাড়তি চাপ। তবে তুলনামূলক কম ক্রেতা দেখা গেছে মেয়েদের বুটিকস ও কাপড়ের আইটেমের দোকানগুলোতে।

সুবাস্তু নজর ভ্যালি মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, বাড্ডা এলাকার অন্য মার্কেটগুলোর তুলনায় সেখানে ঈদের কেনাকাটা হয় বেশ জমজমাট। মার্কেটে জুতা থেকে শুরু করে ছেলেদের পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও শার্টের দোকানে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায়। এর পাশাপাশি মেয়েদের থান কাপড়, কসমেটিকস ও শিশুদের কাপড়ের দোকানগুলোতেও চলছে বেচাকেনার ধুম।

মার্কেটের নিচ তলায় বামপাশে রয়েছে জুতার দোকান। শেষ মুহূর্তে সেখানেও ক্রেতারা ভিড় করছেন। ড্রিম গ্যালারি দোকানের একজন বিক্রয় প্রতিনিধি জাগো নিউজকে জানান, গত শুক্রবার থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। এর আগে মোটামুটি ছিল। এখন বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।

নিচ তলায় হাতের ডান পাশে থান কাপড়ের দোকানেও ভিড় চোখে পড়ে। বিক্রেতারা জানান, থান কাপড় আইটেমের বিক্রি রমজানের শুরু থেকেই শুরু হয়। শেষ মুহূর্তেও তা চলছে।

Advertisement

দ্বিতীয় তলায় কসমেটিকসের দোকান। তৃতীয় তলায় ছেলেদের জামা কাপড় ও মেয়েদের বুটিকস, শিশুদের শাড়ি ও বোরকা দোকান। সেসব দোকানে দেখা যায় দরদাম করেই কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। তুলনামূলক তৃতীয় তলায় ক্রেতা উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি।

সেজান নামে এক ক্রেতা জিন্স ও পাঞ্জাবি নিতে এসেছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এখানে বেশ ভালো কালেকশন থাকে। মোটামুটি দামের মধ্যে কেনাকাটা করতে হচ্ছে। গতকাল বেতন পেয়ে আজ কেনাকেটা করতে এলাম।

চতুর্থ তলার দোকানগুলোতে প্রিমিয়াম লুক দেওয়া হয়েছে। নিচে দরদাম করে কেনাকাটা করা গেলেও সেখানে সবকিছু বিক্রি হচ্ছে এক দামে। কেরন, এঞ্জেল, ব্লু ড্রিম, সুলতানা ফ্যাশনের মতো ব্র্যান্ডগুলোর দোকান রয়েছে ওই ফ্লোরে।

আরও পড়ুন

যমুনা ফিউচার পার্কে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের বেচাকেনা বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে কোথাও ভিড়, কোথাও নিশ্চুপ

হাফিজুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদের তো আর বেশিদিন বাকি নেই। আমরা চাকরি করি, সময়ও পাই না। অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছি আজকে মার্কেটে আসবো। এখন ঘুরে ঘুরে দেখছি। সবার আগে পাঞ্জাবি পছন্দ করছি।

সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে সারি সারি ভ্যানে বাচ্চার জন্য জামাকাপড় দেখছেন হাফিজ। তিনি বলেন, এক ঘণ্টা মার্কেটে ঘুরেছি, ওখানে পছন্দ হলেও দামে মেলে না। দামে মিললে পছন্দ হয় না। তাই বের হয়ে বাইরে দেখছি মেলানো যায় কি না। এবার জিনিসপত্রের অনেক দাম। গত ঈদের তুলনায় প্রতিটি জামায় অন্তত ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে।

শাহজাদপুর কনফিডেন্স শপিং সেন্টারের রিয়া ফ্যাশন ম্যানেজার ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, রমজান শেষ দিকে। ক্রেতারা শেষ মুহূর্তে মার্কেটে আসছেন, ঘুরছেন, পছন্দ মতো পোশাক কিনছেন। ঈদ ঘিরে ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখেই আমরা দোকানে নতুন মালামাল তুলেছি।

এদিন বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারে ঈদের বেচাকেনার আমেজ খুব একটা দেখা যায়নি। অনেকটা ক্রেতাশূন্যই ছিল পুরো মার্কেট। তবে উইনার ব্র্যান্ডের দোকানে ক্রেতা উপস্থিতি ছিল আশাব্যঞ্জক।

এএএম/এমকেআর/জিকেএস