শেরে বাংলায় হঠাৎ বোমা ফাটালেন খালেদ মাহমুদ সুজন। জাতীয় দলের এ সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক টিম ডিরেক্টর বলে দিলেন, ‘আমি মনে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটের আর সলিউশন না। বাংলাদেশের আরও বড় বড় কোচ আছে। আমার আর বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোন দায়িত্ব গ্রহণেরও আগ্রহ নেই।’
Advertisement
ক্ষোভ ঝরা কন্ঠে সুজন আরও বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে আমি যা করেছি (হোয়াট আই ডান), আমি মনে করি ওটা আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সঙ্গে যায় না। হয়তোবা আমি অত বড় কোচ না। এত কিছু জানিও না ক্রিকেট নিয়ে। তারপরও আমি করি, আমার সম্মান আছে। গত বিশ্বকাপে আমি সেই সম্মানটা পাইনি। তো আমি আর এই কাজ (জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর বা অন্য পদে) করতেও চাইনি।’
সামনেই দু’মাস পর যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য শেষ ৭২ ঘণ্টায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার, কোচ, কোচিং ও সাপোর্টিং স্টাফ, নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্ট মিলিয়ে জনা তিরিশেক আমেরিকান দুতবাসে গিয়েছিলেন। সেখানে দেখা যায়নি খালেদ মাহমুদ সুজনকে। অথচ তিনি সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও টিম ডিরেক্টর হিসেবে ভারতে দলের সাথে ছিলেন। তাহলে এবার নেই কেন?
আজ রোববার শব-ই কদরের ছুটির দিন শেরে বাংলায় ছিল প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে গাজী গ্রুপ ও শাইন পুকুরের ম্যাচ। খালেদ মাহমুদ সুজন শাইনপুকুরের প্রধান পরামর্শক হিসেবে খেলা দেখতে এসেছিলেন। তখনই উপস্থিত সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সুজনকে প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি কী আর জাতীয় দলের সঙ্গে নেই?’ এর জবাবেই ওপরের ওমন ক্ষোভ মিশ্রিত মন্তব্য করেন খালেদ মাহমুদ সুজন। প্রসঙ্গতঃ ভারতে হওয়া গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও খালেদ মাহমুদ সুজন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের বিশেষ অনুরোধে শেষ মুহুর্তে টিম ডিরেক্টরের দায়িত্ব নেন; কিন্তু জানা গেছে, সেখানে তার তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। এমনকি দলের নীতি নির্ধারনী সিদ্ধান্ত যে সব টিম মিটিংয়ে হয়েছে, সেখানেও তার থাকার অনুমতি ছিল না এবং বিশ্বকাপের পরপরই জানা যায়, খালেদ মাহমুদ সুজনের টিম ডিরেক্টর হিসেবে কোন ক্ষমতাই ছিল না।
Advertisement
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, জাতীয় দলের সাবেক ম্যানেজার, সহকারি কোচ, প্রধান টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার থেকে শুরু করে টিম ডিরেক্টর- নানা পদে দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় কাজ করার পর ‘ঠুটো জগন্নাথ’ হয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা তার ভাল লাগার কথা নয়। আর খালেদ মাহমুদ সুজন তেমন ক্যারেক্টারও নন। তিনি বরাবরই ক্রিকেটারদের সাথে টেকনিক্যাল বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যাল কাজ করতে অভ্যস্ত। সেখানে ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার কোন ভূমিকাই ছিল না- বিষয়টা তিনি কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি । তাই ক্ষোভে-দুঃখে এবার আর থাকতে চান না বলে জানিয়ে দিলেন তিনি।
বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুজন আরও বলেন, ‘পাপন ভাই আমার অধিনায়ক, উনি আমাকে যখন বলেন যে ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে হবে, আমি করবো; কিন্তু আমি মনে করি উনি আর আমাকে বলবেন না ফাইন লেগে ফিল্ডিং করতে। আমি মনে করি, আমি কোন সলিউশন না এখন আর। এত বড় বড় কোচরা আসছে, যারা হাইলি পেইড, তাদের মধ্যে আমার না যাওয়াটাই ভালো। আমি এখন আর ২৮-২৯ বছরের বালক না, আমার সম্মানটা এখন আমাকে রাখতে হবে। পাপন ভাইকে আগের মতোই সম্মান করি; কিন্তু আমি রিকোয়েস্ট করি পাপন ভাইকে, যেন উনি আমাকে আর এ বিষয়ে কোন কাজ করতে না বলেন।’
জাতীয় দলের সাথে সব রকম সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলার ঘোষণা দিয়ে সুজন জানিয়ে দিলেন, ‘আমি নিজের জীবন নিয়ে থাকতে চাই। আমি আবাহনী, বিপিএলে ও রাজশাহীতে ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে কাজ করি। এগুলো নিয়ে খুব খুশি আছি। দেশের ক্রিকেটের কোন উন্নতিতে যদি কাজ করতে হয় তবে অবশ্যই করবো; কিন্তু জাতীয় দলের অ্যাসাইনমেন্টগুলো হয়তো আমার জন্য না, আমি যেটা বললাম আমি হয়তো ওটা ডিজার্ভ করি না।’
এআরবি/আইএইচএস/
Advertisement