বিশেষ প্রতিবেদন

শাহজালাল বিমানবন্দরের ‘কোর-সিকিউরিটি’ পর্যাপ্ত

নিরাপত্তা ত্রুটির অজুহাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পণ্যবাহী কোনো বিমানের সরাসরি যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির পর এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপর শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থার উন্নয়নে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি রেড লাইন এভিয়েশন সিকিউরিটি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে বিষয়টি নিয়ে দেশি-বিদেশিরা এখনো এক ধরনের শঙ্কা ও বিভ্রান্তিতে রয়েছেন। নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিতে এই বিভ্রান্তি আরো বেড়েছে। কিন্তু দেশের এই বিমানবন্দরের মূল নিরাপত্তায় কোনো ঘাটতি নেই বলে স্বীকার করেছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক।বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি কোর সিকিউরিটি এবং  অন্যটি নন-কোর। কোর সিকিউরিটি বলতে, বিমানবন্দরের দৃশ্যমান নিরাপত্তাকে বোঝায়। এটি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রের অধীনস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শাহজালাল বিমানবন্দরে এই নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ, আনসার, আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান (এপিবিএন)।  নন-কোর সিকিউরিটির মধ্যে থাকে- লাগেজ স্ক্যানিং, যাত্রীর দেহ তল্লাশি ইত্যাদি। শাহজালাল বিমানবন্দরে নন-কোর সিকিউররিটির বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল এভিয়েশন ও তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা। যুক্তরাজ্য শাহজালালের নন-কোর সিকিউরিটি বা মনিটরিং সিস্টেম নিয়েই উদ্বেগ জানিয়েছিল, শাহজালালের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে নয়। শাহজালাল বিমানবন্দরের একজন রিজিওনাল এভিয়েশন সিকিউরিটি লিঁয়াজো অফিসার (রাসলো) থাকেন। সেই অফিসার কিছু দিন পর পর ব্রিটিশ সরকারকে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদন দেন। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ থেকে লন্ডনে যাওয়া বিমানে কোনো হুমকি আছে কি না সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়। ২০১৫ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের রাসলো বিমানবন্দর প্রতিবেদনে শাহজালালের স্ক্রিনিংয়ের দুর্বলতার বিষয়টি উঠে আসে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী শাহজালালে যাত্রীদের লাগেজ ঠিকমতো তল্লাশি করা হয় না। কর্মকর্তারা গল্পগুজব করেন। ব্যাগে থাকা তরলপদার্থ ঠিক মতো তল্লাশি করা হয় না যে সেগুলো দাহ্য পদার্থ কি না। এরই প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক রেডলাইন সিকিউরিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এসব বিষয় তদারকির জন্য। তবে বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের সিকিউরিটি কোম্পানি নিয়োগ দেয়ার অর্থই এই নয় যে, এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নাজুক। বিমানবন্দরে নন-কোর সিকিউরিটিতে কিছু দুর্বলতা পাওয়া গেছে। এদিকে রাসলোর প্রতিবেদনে শাহজালালের কোর নিরাপত্তার প্রশংসা করা হয়েছে। প্রশংসা করা হয়েছে এপিবিএনের। রিপোর্টের একটি কলামে লেখা ছিল, বিমানবন্দর চত্বর থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইট পর্যন্ত এপিবিএনের কর্মতৎপরতা চোখে পড়ার মতো। তাদের নিরাপত্তা ভেদ করে কোনো লোক লন্ডনগামী ফ্লাইটে উঠে নাশকতা চালানোর সম্ভাবনা নেই। শাহজালালের নিরাপত্তা নিয়ে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন শিমুল জাগো নিউজকে বলেন, শাহজালালের মূল নিরাপত্তায় কোনো খুঁত নেই। রাসলোর প্রতিবেদনে দৃশ্যমান নিরাপত্তার প্রশংসা করা হয়েছে। রেডলাইনের সদস্যরা কাউন্সিলিং ও ট্রেনিং দিচ্ছেন। নন-কোর নিরাপত্তার খুঁতগুলো শোধরানোর ব্যবস্থা চলছে। এআর/এনএফ/পিআর

Advertisement