বিএনপির কাছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা দিকনির্দেশনা চান বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রতিটি বড় বিজয়ের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আমাদের নবীজীও একদিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। আমাদের অত্যাচারিত নিপীড়িত নেতাকর্মীরাও হতাশ নন। তারা বলছেন, আপনারা যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেন, আন্দোলনের ডাক দেন, আমরা রাজপথে প্রাণ দিয়ে হলেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও নিখোঁজ নেতাকর্মীদের পরিবারের সম্মানে দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
Advertisement
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেছেন, ভয়ঙ্কর ভয়াবহ দানবের আক্রমণ আমাদের ওপর চলছে। সরকার আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের গুম করা হচ্ছে, পঙ্গু করা হচ্ছে, খুন করা হচ্ছে। বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব স্তম্ভ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই মাস পবিত্র মাস। আল্লাহন কাছে ফরিয়াদ করছি, আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দেন। যে দানব সরকার আমাদের বুকে চেপে বসেছে তা থেকে মুক্তি দিন। এ সরকারকে সরাতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। এদের বিতাড়িত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, কারাগারে ঢাকা মহানগরের হাজারো নেতাকর্মীকে আমি দেখেছি। পবিত্র রমজানেও তারা বিনাদোষে বন্দি জীবনযাপন করছেন। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। ২৮ ও ২৯ অক্টোবর দুই দিনেই ৩৭ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতা করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী শাসক ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। এর আগেও তারা এই চেষ্টা করেছিল। সফল হয়নি, এবারও সফল হবে না।
Advertisement
ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগামী দিনে ঢাকাকে আন্দোলনের দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য জেলখানা সেকেন্ড হোম। আজ গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা জানেন না তারা জীবিত নাকি মৃত। যার কারণে পারিবারিক সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব চাই। বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কারও সঙ্গে আপস করে না। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় না। সেই আপসহীন নেত্রী যখন বন্দি, তখন গণতন্ত্রও বন্দি। আজ অন্যায় না করে জেলে যেতে হয়, খুন হতে হয়। সিপাহিদের হাতে মার খেতে হয়।
আরও পড়ুন
বিএনপিপন্থি মুক্তিযোদ্ধারা ফ্রিডম ফাইটার বাই অ্যাক্সিডেন্ট: কাদেরএসময় নিখোঁজ ও নিহত নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সদস্যসচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।
আব্দুস সালাম বলেন, আজ দেশনেত্রীকে বিদেশে চিকিৎসা করতে দিচ্ছে না। এছাড়াও নিখোঁজ হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা চৌধুরী আলমের পুত্র আবু সাদাত চৌধুরী ইমন, নিহত পারভেজ হোসেনের মেয়ে রিমি, সাজেদুল হকের বোন তানজিদা ইসলাম তুলি এবং আনোয়ার হোসেনের মেয়ে রাইসা বক্তব্য রাখেন।
দোয়া ও ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহমিনা রুশদি লুনা, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আনম সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, তানভীর আহমেদ রবিন, মনির চেয়ারম্যান, উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এজিএম শামসুল হক, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, ফেরদৌস আহমেদ মিষ্টি, আকতার হোসেন, সাইদুর রহমান মিন্টু, এবিএম রাজ্জাক, মাহফুজ কবির মুক্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন
কেএইচ/ইএ/জেআইএম