দেশজুড়ে

সেই রানু বেগম উঠলেন নতুন ঘরে, পেলেন ঈদ উপহার

‘এমপি কথা দিছিল আমাকে ছাপরা ঘরে ঝড়-বৃষ্টিতে আর কষ্ট করতে হইবো না। এইবার নতুন ঘরেই ঈদ করতে পারমু। হে তার কথা রাখছে। ঈদের আগেই আমাকে নতুন ঘর করে দিছে। দোয়া করি আল্লাহ হেরে অনেক ভালো রাখুন।’

Advertisement

নতুন ঘর পেয়ে খুশিতে কথাগুলো বলছিলেন কলাগাছের ঝোপের আড়ালে পলিথিন মোড়ানো ছাপরা ঘরে বসবাস করা রানু বেগম। তার বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলতা এলাকায়।

ষাটোর্ধ্ব রানু বেগমের ৫০ বছর আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর এলাকায়। একাধিকবার নদীভাঙনের শিকার হয়ে সহায়-সম্বল সব হারিয়ে স্বামী-সন্তানদের সঙ্গে চলে যান রাজধানী ঢাকায়। তবে অর্থকষ্টের সংসারে সন্তানের কাছে বোঝা হয়ে চার বছর আগে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন রানু বেগম। ভাইদের অবস্থা তেমন ভালো না হওয়ায় অন্যের বাড়িতে দু’মুঠো খাবারের বিনিময়ে কাজ করেন। পাশাপাশি রাস্তার পাশে একখণ্ড জমিতে পলিথিন আর কাপড় দিয়ে মোড়ানো ছাপরা ঘর বানিয়ে বসবাস করছিলেন।

এ নিয়ে গত ৩ মার্চ ‘যখন ঝড়-তুফান আহে তখন বইয়া বইয়া ভিজি’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাগো নিউজ। বিষয়টি সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমের নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেন তিনি। এর পরপরই নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে রানু বেগমের ঘর করার জন্য জায়গা নির্ধারণ করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

‘যখন ঝড়-তুফান আহে তখন বইয়া বইয়া ভিজি’

শনিবার (৬ এপ্রিল) নতুন ঘরে ওঠেন রানু বেগম। পাশাপাশি তার জন্য ঈদসামগ্রী উপহার পাঠান এমপি। নতুন ঘরে উঠে ভিডিও কলে এমপির সঙ্গে কথা বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রানু বেগম।

আবেগাপ্লুত রানু বেগম বলেন, ‘একসময় রাস্তার পাশে কলাগাছের মধ্যে ছাপরা ঘরে থাকতে অনেক কষ্ট হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপা হয়ে গেছি। শীতে একটা কাঁথা গায় দিয়া রাইত পার করছি। সাংবাদিকরা আমাকে নিয়া নিউজ করার পরে এমপি নিজে আমাকে দেখতে আসছে। তিনি আমাকে নতুন ঘর করে দিয়েছে। আমি আজ ভীষণ খুশি হয়েছি।’

রানু বেগমের ভাই নুর হক ছৈয়াল বলেন, ‘এমপি সাব নিজে আমার বইনের জন্য বড় একটা ঘর করে দিছে। ঈদের জন্য উপহার পাঠাইছে। আমরা সবাই এমপি সাবের জন্য দোয়া করি।’

Advertisement

ভুমখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীমকে জানাই। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ঈদের আগেই রানু বেগমের জন্য নতুন ঘর করে দেওয়া হবে। আজ রানু বেগম নিজ ঘরে উঠেছেন। এমপি সাহেব তার কথা রেখেছেন। নতুন ঘর পেয়ে রানু বেগম খুব খুশি হয়েছেন।’

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদটি দেখে আমি রানু বেগমকে দেখতে যাই। ঈদের আগে তার জন্য আমার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বেগম আশ্রাফুন নেছা ফাউন্ডেশন’-এর পক্ষ থেকে নতুন ঘর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। ঈদের আগেই আমরা রানু বেগমকে নতুন ঘরটি উপহার দিতে পেরেছি। আমি সবসময় তার পাশে রয়েছি।

বিধান মজুমদার অনি/এসআর/জেআইএম