জাতীয়

ঈদযাত্রার ট্রেনে বিলম্ব: ভোগান্তিতে যাত্রীরা

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। ঈদযাত্রার চতুর্থ দিন শনিবার (৬ এপ্রিল) ঘরে ফিরছেন অসংখ্য যাত্রী। এদিকে ভোর থেকে বিলম্বে ছাড়ছে কয়েকটি ট্রেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

Advertisement

এখন পর্যন্ত সোনারবাংলা এক্সপ্রেস, এগারসিন্দুর প্রভাতি, তিস্তা এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সেপ্রেস সময়মতোই স্টেশন ছেড়েছে। তবে মহুয়া কমিউটার সকাল সোয়া ৮টায় স্টেশন ছাড়ার কথা থাকলেও সাড়ে ৮টায়ও ছেড়ে যায়নি। স্টেশন ছাড়ার অপেক্ষায় রয়েছে বুড়িমারী এক্সেপ্রেস, কর্ণফুলী কমিউটার, রংপুর এক্সপ্রেস ও দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার ভোর ৬টায় ধূমকেতু এক্সপ্রেসের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটি প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা (১ ঘণ্টা ৫০ মিনিট) বিলম্বে স্টেশন ছেড়েছে। আরও কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রেলওয়ে কর্মকর্তা। মূলত ট্রেন দেরিতে স্টেশনে পৌঁছানোর কারণে এমনটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এদিন ভোর ৬টায় ধূমকেতু এক্সেপ্রেসের মাধ্যমে ট্রেনযাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে রাজশাহী অভিমুখে কমলাপুর স্টেশন ছাড়ে সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে। আরও কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়ছে দেরিতে স্টেশনে আসার কারণে।

Advertisement

ধূমকেতু ট্রেন দেরিতে ছাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনটির যাত্রীরা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের বিড়ম্বনা ছিল বেশি। এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, দিনের শুরুতেই যদি এভাবে দেরিতে স্টেশন ছাড়ে তবে বাকিটা সময় কী হবে? স্টেশনের ভেতরে ভালো টয়লেট নেই, বিশ্রামও নেওয়া যায় না। এ অবস্থায় শিডিউল বিলম্ব হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আশা করবো যাত্রীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে যথাসময়ে ছাড়বে ট্রেন।

কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনে কর্মরত এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ধূমকেতু ঢাকায় প্রবেশ করেছে দেরিতে। এরপর সেটাকে ক্লিনসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হয়। এতে কিছুটা বিলম্বে ট্রেনটি রাজশাহীর উদ্দেশ্যে স্টেশন ছেড়েছে। বাকি ট্রেনগুলো সঠিক সময়ে ছাড়ছে। তবে যেগুলো দেরিতে স্টেশনে ট্রেন পৌঁছালে দেরি হবে।

এদিকে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষদের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বিনা টিকিটে কেউ স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছে না। যাত্রীর নিরাপত্তা রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ (আরএনবি), পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তথ্যগত সহায়তায় রোভার স্কাউটসহ স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। এতে যাত্রী সাধারণও খুশি।

আরিফ হুসাইন নামে খুলনাগামী এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি যেতে পারছি এটা ঈদের আগে বাড়তি আনন্দ। কোনো অঘটন না ঘটলে গ্রামের পরিবার নিয়ে ইফতার করতে পারবো। একই কথা জানান কবির ও সুমন নামে অন্য যাত্রী।

Advertisement

এরই মধ্যেই ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেনে ঢাকা ছেড়েছেন অনেকে। গতবারের মতো এবারও অনলাইনে শতভাগ টিকিট বিক্রি হওয়ায় স্টেশনে ছিল না বাড়তি ভিড়। যারা অনলাইনে টিকিট কাটতে পেরেছেন, তারাই শুধু মূল স্টেশনের ভেতরে (প্ল্যাটফর্ম) প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন। তবে এর বাইরেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন বিহীন টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে যাত্রার আগ মূহুর্তে।

গত ২৪ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করে বাংলাদেশ। গত ৩ এপ্রিল শুরু হয়েছে ঈদের ফিরতি যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি। একইদিনে শুরু হয় ট্রেনযোগে ঈদযাত্রা।

এদিকে শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকা ফেরার টিকিট বিক্রি করছে রেলওয়ে। ১৬ এপ্রিল যারা ঢাকায় ফিরতে চান তারাই টিকিট সংগ্রহ করবেন এদিন। অনলাইন মাধ্যমে সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। টিকিট ক্রয় সহজ করার লক্ষ্যে পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টা থেকে এবং পূর্বাঞ্চলের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দুপুর ২টা থেকে ইস্যু করা হচ্ছে। যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট ভ্রমণের দিন যাত্রা শুরুর আগে আগ মুহুর্তে স্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে।

ইএআর/এমআইএইচএস/এমএস