চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প (যান ওঠানামার পথ) নির্মাণে শতবর্ষী গাছকাটা বন্ধ করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
জনস্বার্থে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ও বন সংরক্ষক চট্টগ্রাম অঞ্চলকে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
অ্যাডভোকেট ফজলুল সাব্বির অভি ও অ্যাডভোকেট মো. এমরান হোসেনের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান ল’ উইংয়ের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রিদুয়ান।
নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নান্দনিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ সিআরবি এলাকার পলোগ্রাউন্ড থেকে টাইগারপাসমুখী অংশে র্যাম্প (যান ওঠা-নামার পথ) নির্মাণ না করে, বিকল্প স্থানে র্যাম্প নির্মাণ করা। জনস্বার্থ ও পরিবেশের ক্ষতির কথা মাথায় রেখে শতবর্ষী গাছ না কেটে নগরীর সিআরবির দ্বিতল সড়ক, নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থানটি সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।
Advertisement
এর আগে ৩ এপ্রিল শতবর্ষী গাছ কেটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের সব উদ্যোগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
একই সঙ্গে এই সড়কের শতবর্ষী গাছগুলোকে ঐতিহ্য ঘোষণার জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান, প্রধান বন সংরক্ষক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপককে নোটিশ পাঠায় বেলা। নোটিশের অনুলিপি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকেও দেওয়া হয়েছে।
নকশা সংশোধনের আশ্বাসে চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করেছে সিডিএ। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। এরমধ্যে দুটি আছে নগরের টাইগারপাসে। দুটি র্যাম্পের মধ্যে টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড পর্যন্ত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কে গাড়ি ওঠার র্যাম্প নির্মাণ করা হবে।
সবুজে ঘেরা অনন্য এই সড়কের একটি অংশ গেছে পাহাড় ঘেঁষে। আরেকটি অংশ নিচে। মধ্যবর্তী পাহাড়ি ঢালে রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এসব গাছে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখির বাসা। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণ করতে গাছগুলো কাটতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে গাছগুলো লাল ও সাদা কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
Advertisement
নগরের দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত এই এলাকায় শতবর্ষী গাছসহ ৪৬টি গাছ কেটে মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্প নির্মাণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিডিএ। কিন্তু দ্বিতল সড়ক এলাকায় গাছ কেটে র্যাম্প নির্মাণের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ১ এপ্রিল আন্দোলন শুরু করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীরা। এর মধ্যে গত ২ এপ্রিল নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করে নকশা সংশোধনের আশ্বাস দেয় সিডিএ।
এফএইচ/জেডএইচ/এএসএম