বান্দরবানের থানচিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর কয়েক দফা গোলাগুলি হয়েছে। সন্ত্রাসীরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে থানচি বাজারের চারপাশে গুলিবর্ষণ করে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার পর এ তথ্য জানান থানচি বাজার কমিটির সভাপতি ও থানচি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে থানচি বাজারের চারপাশে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে গুলি করতে করতে তারা থানচি থানার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ তাদের প্রতিহত করে।’
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটা থেকে থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় কেএনএফের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবির তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। মূলত দুই স্থানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। থানচি থানা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনে। পুলিশ এবং বিজিবি দুই পক্ষের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে।’
Advertisement
আরও পড়ুনথানচিতে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের গোলাগুলি বান্দরবানে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধার ‘ঘোষণা দিয়েই’ বান্দরবানে হামলা চালালো কেএনএফ
তিনি আরও বলেন, ‘রাত সাড়ে নয়টা থেকে গোলাগুলি বন্ধ আছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।’
রাত সাড়ে নয়টার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হান কাজেমি জানান, সাড়ে ৮টার দিকে কেএনএফ সদস্যরা দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাংক লুটের চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ বাঁধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে।
থানচি বাজারের ২০০ থেকে ৩০০ গজের ভেতরেই রয়েছে থানচি থানা, একটি বিজিবি ক্যাম্প এবং থানচি বাজারের শেষ মাথায় রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি চেকপোস্ট।
Advertisement
এর আগে, গতকাল বুধবার দুপুরে থানচি বাজারে গুলি চালিয়ে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
আরও পড়ুনকুকি-চিনের রক্তথাবায় বিপন্ন সবুজ পাহাড়‘কেএনএফ’র কাছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বাড়িছাড়া তরুণরা
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েপড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয়রা জীবন রক্ষায় অন্ধকারে আশ্রয় নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে শোনা যাচ্ছে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। ভিডিওতে একজনতে বলতে শোনা যায়, ‘থানচি থানা ঘেড়াও করেছে। ওরা বাজারে চলে আসছে। থানচি থানা, বিজিবি ক্যাম্প ও বাজার ঘিরে ফেলছে। অনেক গোলাগুলি হচ্ছে, বৃষ্টির মতো।’
রাত ১১টা ২৪ মিনিটে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের প্রায় ৫০ জনের একটি দল হামলায় অংশ নেয়। তারা থানা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশ সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে ৪০০-৫০০ রাউন্ড পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে তারা কয় রাউন্ড গুলি করেছে, তা জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর নেই।’
এএজেড/কেএসআর/জেআইএম