আন্তর্জাতিক

ইরানের প্রতিশোধের ভয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করছে ইসরায়েল

সিরিয়ার ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার ভবনে বিমান হামলায় রেভল্যুশনারি গার্ডের সাত সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এই ভয়ে এরই মধ্যে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে দখলদার ইসরায়েল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সেনাবাহিনীর সব যুদ্ধ ইউনিটের ছুটি বাতিল করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। পাশাপাশি রিজার্ভ সেনাদেরও তলব করছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

এর আগে বুধবার ইসরায়েলের চ্যানেল ১২- এর এক খবরে জানানো হয়েছিল, প্রতিশোধ নিতে হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো গ্রুপকে না দিয়ে সরাসরি ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে ইরান। আর হুমকি মূল্যায়নের পর বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত সৈন্যদের তলব করেছে আইডিএফ।

প্রাক্তন ইসরায়েলি গোয়েন্দা প্রধান আমোস ইয়াদলিন বলেছেন, দামেস্কে হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য শুক্রবারকে (৫ এপ্রিল) বেছে নিতে পারে ইরান। কারণ, এটিই রমজান মাসের শেষ শুক্রবার। আবার সেদিনই ইরানি কুদস (জেরুজালেম) দিবস। ইরান সরাসরি বা কোনো সমর্থিত গ্রুপের মাধ্যমে এই প্রতিশোধ নিতে পারে।

Advertisement

এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সেনাবাহিনীর সব যুদ্ধ ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে আইডিএফ। আইডিএফ এরই মধ্যে একটি যুদ্ধে (গাজা সংঘাত) রয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুসারে দেশের অভ্যন্তরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়টি নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংরক্ষিত সেনাদের খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। তবে বৃহস্পতিবার তেল আবিবের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এদিন জিপিএস সংশ্লিষ্ট পরিষেবাগুলো ব্যাহত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা পেতে বা এমন হামলার পূর্বাভাস পেতে এই জিপিএস পরিষেবা ব্যবহৃত হয়।

সোমবার (১ এপ্রিল) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের কনস্যুলার ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের পাঁচজন সামরিক উপদেষ্টাসহ দুই জেনারেল নিহত হন। নিহতদের মধ্যে অভিজাত কুদস ফোর্সের শীর্ষ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও ডেপুটি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজি-রহিমিও রয়েছেন। এই ‘হত্যাকাণ্ডের’ প্রতিশোধ নেওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছে ইরান।

অন্যদিকে, এই হামলার দায় স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি ইসরায়েল। তবে এই হামলা ইসরায়েলি বিমানবাহিনীই চালিয়েছে বলে ধারণা ইরানের। এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সেই সঙ্গে, লেবানন সীমান্তে ইরান-সমর্থিত প্রতিরোধ গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গেও গুলি বিনিময় চলছে। তাছাড়া ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। তবে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি ইরান।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল, রয়টার্স

এসএএইচ