জাতীয়

ব্যাংক ম্যানেজারকে ছাড়তে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি কুকি-চিনের

বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজারকে ছাড়াতে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে ব্যাংক ম্যানেজারকে অক্ষত ও নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। এজন্য নানান কৌশলে কাজ করছে র‌্যাব। ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তার পরিবারের কথা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি সুস্থ আছেন। তার অবস্থান শনাক্তে কাজ করছে র‌্যাব।’

আরও পড়ুন‘ঘোষণা দিয়েই’ বান্দরবানে হামলা চালালো কেএনএফ ব্যাংকের ভল্ট খুলতে না পেরে ম্যানেজারকে তুলে নিয়ে যায় কেএনএফ কুকি-চিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা স্থগিত ঘোষণা 

Advertisement

‘একই সঙ্গে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছি কীভাবে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতার করা যায়। পাশাপাশি স্থানীয়দের সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়ে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ করে জড়িতদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’

প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুসারে এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ব্যাংক ও আশপাশের এলাকায় তারা বেশ কিছুদিন ধরে ছদ্মবেশে অবস্থান করে আসছিল। র‌্যাবের পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বলা যায়, সন্ত্রাসীরা টাকার জন্য এ কাজটি করেছে। টাকাই তাদের মূল টার্গেট ছিল। উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের একটি শান্তি কমিটির মাধ্যমে শান্তি আলোচনা চলছিল। এ সময়ে তাদের অবস্থান ও আধিপত্য জানান দেওয়ার চেষ্টায় এই হামলা।’

হামলায় অন্য কারও ইন্ধন রয়েছে কি না বা কোনো কারণ রয়েছে কি না সে বিষয় র‌্যাবের গোয়েন্দারা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে র‌্যাব-১৫ থেকে বান্দরবান ক্যাম্পে জনবল বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ে অভিযানে র‌্যাব সদরদপ্তর থেকে দক্ষ র‌্যাব সদস্যদের বান্দরবান পাঠানো হয়েছে। আপনারা জানেন ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে পার্বত্য এলাকায় অভিযান চালানো অত্যন্ত কঠিন। তাই অভিজ্ঞদের ছাড়া পাহাড়ে অভিযান চালানো দুরূহ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় র‌্যাব অপহৃত ব্যাংক কর্মকর্তা ও অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছে।’

Advertisement

আরও পড়ুনবান্দরবানের তিন উপজেলায় ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ কুকি-চিনের রক্তথাবায় বিপন্ন সবুজ পাহাড় মরণকামড় দিলে আমরাও প্রতিহত করবো 

শতাধিক লোক মিলে এমন হামলার ঘটনায় গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা দেখছেন কি না- জানতে চাইলে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে অভিযান বা গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো কঠিন। আর শান্তি আলোচনা চলমান থাকার কারণে শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রক্রিয়াটা চলমান ছিল। আরেকটা বিষয় জঙ্গি অভিযান চলার সময় অনেকের বিষয়ে তথ্য ছিল, বিভিন্নভাবে তাদের সহযোগিতার অভিযোগ ছিল। কিন্তু শান্তি আলোচনা চলমান থাকায় আমরা চাচ্ছিলাম তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন। কিন্তু তারা সেটি করেননি। আমাদেত কাছে ব্যাংকে হামলার তথ্য ছিল না। কিন্তু তাদের টাকার প্রয়োজন এমন তথ্য ছিল। এ তথ্য বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সরবরাহ করেছি। জঙ্গি অভিযানেও আমরা বলেছি টাকার জন্য তারা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণসহ নানান সহযোগিতা করেছে।’

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ব্যাংকে হামলার পাশাপাশি তারা পুলিশ ও আনসারদের ওপর হামলা চালিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়া মসজিদ ও আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার পরে শান্তি আলোচনার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। যা এরই মধ্যে শান্তি কমিটি ঘোষণা করেছে।’

টিটি/কেএসআর/জেআইএম