আন্তর্জাতিক

মুসলিম সেনাদের জন্য মৌলভি নিয়োগ দেবে জার্মানি

জার্মান সেনাবাহিনীতে প্রয়োজনে ‘পাস্টোরাল কেয়ার’ বা ধর্মগুরুর সহায়তা পেয়ে আসছিল খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বীরা। কিন্তু মুসলিম সেনা সদস্যদের জন্য এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সেই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। মার্চের মাঝামাঝি জার্মান সশস্ত্র বাহিনীর সংসদীয় কমিশনার এফা হ্যোগল তৃতীয় বাৎসরিক প্রতিবেদনে মুসলমানদের জন্যও ‘মিলিটারি চাপল্যান্সি' বা ধর্মগুরুর সহায়তা নেওয়ার সুযোগ তৈরি করার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি মনে করেন যে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সেনাদের জন্য এটা না থাকাটা খুবই অসন্তোষজনক ব্যাপার। তাই তিনি দ্রুত এক্ষেত্রে যোগ্যদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

Advertisement

হ্যোগল গতবছর দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে ভূমিকম্পের পর জার্মান সেনাদের সেখানে উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত হওয়ার কথা স্মরণ করেন। সেখানে মোতায়েন করা সেনাদের মধ্যে মুসলমান সেনারাও ছিলেন। তাসত্ত্বেও সেখানে দুই অমুসলিম সামরিক ধর্মগুরু ‘পাস্টোরাল কেয়ার' দিয়েছেন।

জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র ডয়চে ভেলেকে নিশ্চিত করেছেন, মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে সামরিক বাহিনীতে মুসলমানদের জন্য ‘পাস্টোরাল কেয়ার' চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অতীতে যে দলই জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিল, তারাই এই বিষয়টিকে অসম্ভব মনে করেছিল। ফলে বছরের পর বছর জার্মান সামরিক বাহিনীতে মুসলিম ধর্মগুরু বা মৌলভীদের সেবা দিতে দেখা যায়নি। যদিও জার্মান সামরিক বাহিনীতে তিন হাজারের মতো মুসলিম সেনা রয়েছেন।

Advertisement

ডয়চে ভেলের এক প্রশ্নের জবাবে জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বেশ কয়েকবছর ধরেই মুসলিম সেনাদের জন্য আলাদা ‘পাস্টোরাল কেয়ার' চালুর বিষয়টি জার্মান সামরিক বাহিনীতে আলোচিত হয়েছে। ক্যাথলিক ও ইহুদি সামরিক ধর্মগুরুরাও এই প্রয়োজনীয়তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া ও নরওয়ের সামরিক বাহিনীতে ইসলামী ধর্মগুরু রয়েছেন। তাদের অধিকাংশের সামরিক ইমামও রয়েছে। জার্মানিতে এক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় ঘাটতি আছে, কারণ এদেশে এমন কোনো সংগঠন নেই, যেটি সব ইসলামি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে।

সেই তুলনায় ২০১৯ সালে জার্মানির ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব জিউস’ এর সহায়তায় জার্মান সামরিক বাহিনীতে ইহুদি সামরিক ধর্মীয় সেবা চালু করা হয়। কাউন্সিলটি সব ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে৷ আর জার্মান সামরিক বাহিনীতে ৫০০ এর মতো ইহুদি সেনা রয়েছে বলে ধারনা করা হয়।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

Advertisement

এসএএইচ