মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ফোনালাপ করেছেন। গত বছরের নভেম্বরে বৈঠকের পর মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বাইডেনের অনুরোধে এই ফোনালাপে অংশ নেন জিনপিং। এ সময় তারা তাইওয়ানসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
Advertisement
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফোনালাপে দুই রাষ্ট্রপ্রধান আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। তবে বাইডেন তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও দক্ষিণ চীন সাগরে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সব পক্ষের অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই নেতা ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিয়াকে চীনের সমর্থন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এছাড়া তারা বাণিজ্যিক চর্চা, উইঘুরে মানবাধিকার লঙ্ঘন, হংকং ও কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক শক্তির প্রভাব থেকে মুক্ত করা নিয়ে কথা বলেন।
আরও পড়ুন:
Advertisement
এসময় বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ককে বিশ্বের সবচেয়ে ফলপ্রসূ সম্পর্ক বলেও উল্লেখ করেন। আলাপকালে তিনি গত বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয় অনুষ্ঠিত তার ও শি’র মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ফোনালাপে শি জিনপিং বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে। উভয় দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক দিকগুলোও বিস্তৃতি লাভ করছে। এসব বিষয় সমাধানে উভয় পক্ষেরই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। দুই দেশের উচিত সম্মানের সঙ্গে সহাবস্থান করা এবং একটি উইন-উইন পরিস্থিতি তৈরি করা।
শি জিনপিং বলেন, তাইওয়ান ইস্যু চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থিতিশীল হওয়ার পথে প্রথম বাধা বা বিপৎসীমা। যুক্তরাষ্ট্রের সেই সীমা অতিক্রম করা উচিত হবে না। তার মতে, তাইওয়ানের স্বাধীনতা এক ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা। যদি কোনো বাহ্যিক শক্তি তাইওয়ানকে এই কথিত স্বাধীনতা অর্জনে উৎসাহ বা সমর্থন দেয়, তাহলে চীন হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।
আরও পড়ুন:
Advertisement
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধ সৃষ্টি করতে চায় না উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, চীনের নিজস্ব ব্যবস্থায় পরিবর্তন নিয়ে আসতে বাধ্য করা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য নয়। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাও চীনকে টার্গেট করছে না। আর যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে না ও চীনের সঙ্গে কোনো সংঘাতেও জড়াতে চায় না। যুক্তরাষ্ট্র ‘এক চীন’ নীতিই অনুসরণ করবে।
শি জিনপিং এসময় বাইডেনকে তার ‘যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতা সমর্থন করে না’ ও ‘এক চীন’ নীতি অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান।
নভেম্বরে বাইডেন ও শি সামরিক যোগাযোগ পুনরায় চালু ও ফেন্টানিল উৎপাদন কমাতে সহেযাগিতায় একমত হয়েছিলেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসের পর দুই নেতা ফোনালাপ করেননি। নভেম্বরের বৈঠকের পর বাইডেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শি যে একজন স্বৈরশাসক, এই বিষয়ে নিজের অবস্থান পাল্টায়নি তার। এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছিল চীন।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি, আল জাজিরা
এসএএইচ