ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।
Advertisement
তিনি বলেছেন, সারা বিশ্বে মানবাধিকার অত্যন্ত কঠিন ও নিষ্ঠুরভাবে লঙ্ঘন হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে সামান্য কিছু হলেই কেউ কেউ ছুটে আসে, বলে বাংলাদেশের সব মানবাধিকার শেষ হয়ে যাচ্ছে। অথচ ফিলিস্তিনে ৩৩ হাজার লোক খুন হয়েছে। সরাসরি সেসব খুন করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যারা সবচেয়ে বড় মদতদাতা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কিছু বলা হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে মানবাধিকার সুরক্ষায় গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সেলিম রেজা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, পুলিশও অনেক সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ করে। সবাই যে করে তা না৷ দেখা গেল, পুলিশ পরিচয়ে কাউকে তুলে নেওয়া হলো। এমন কিছু হলে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পিবিআই, সিআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে কাজ করি। পুলিশ সদস্যরা শাস্তির আওতায় এসেছে, এমন ঘটনাও আছে।
Advertisement
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিপ্রেক্ষিত-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর। আর কমিশনের সাম্প্রতিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন সংস্থাটির পরিচালক কাজী আরফান আশিক।
মূল প্রবন্ধে সৈয়দ বোরহান কবীর বলেন, গণমাধ্যমই মানবাধিকারের পক্ষে জনগণকে সচেতন করে। মানবাধিকার সুরক্ষিত হলে জনগণ কীভাবে লাভবান হবে, তা গণমাধ্যমে প্রচার হবে।
কাজী আরফান আশিক ভুয়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৮২টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনে। যার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৩০টি অভিযোগ, ১২৯টি অভিযোগ নিয়ে কাজ চলমান আছে আর ২৩টি অভিযোগ প্রক্রিয়াধীন। অন্যদিকে একই সময়ে ৫১টি সুয়োমোটো অভিযোগের মধ্যে ১২টি নিষ্পত্তি ও ৩৯টি চলমান রয়েছে।
Advertisement
অনুষ্ঠানে আলোচকেরা বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে গণমাধ্যম। বিশ্বে যে দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি যত খারাপ সে দেশে গণমাধ্যম তত শৃঙ্খলিত। যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রবণতা যত বেশি, সেখানে গণমাধ্যমও তত সংকুচিত ও ঝুঁকিতে। মুক্ত গণমাধ্যম এবং মানবাধিকার সুরক্ষা একে অন্যের পরিপূরক।
সভায় মানবাধিকার সাংবাদিকতা বিকাশে সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, আইনি সুরক্ষা ও সঠিক তথ্যপ্রাপ্তি সহজ করার সুপারিশ করা হয়।
এসএম/এমকেআর