মারা গেলেন ক্যাডাবেরিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা ব্রেন ডেথ সারাহ ইসলাম থেকে কিডনি পাওয়া শামীমা আক্তার। ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারিতে সারাহ ইসলামের অঙ্গদানের মাধ্যমে নতুন জীবন পেয়েছিলেন শামীমা। তবে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো তাকে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমার মৃত্যু হয়। এর ফলে সারাহর কিডনি পাওয়া দুই নারীরই মৃত্যু হলো। এর আগে গত অক্টোবরে হাসিনা নামে কিডনি পাওয়া অন্য এক নারী মারা যান।
বিএসএমএমইউর ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল শামীমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমজন (হাসিনা) ফুসফুসের সংক্রমণে মারা গিয়েছিলেন। দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিল শামীমা। সম্প্রতি তার ভাই জানায়, ক্রিটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে শামীমা। পরে তিন সপ্তাহ আবারও বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও কেন শুকিয়ে যাচ্ছিল সেটি ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। ক্রিটিনিন পুনরায় বাড়ায় ওয়ার্ড থেকে তাকে কেবিনে আনা হয়। তারপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চার দিন আগে আইসিইউতে নেওয়া হয়।
Advertisement
শামীমার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম। আমাদের এখানে সমস্যা হওয়ায় ওয়ার্ডে নিয়ে সি ভাইরাস ডায়ালাইসিস দিয়েছিলাম। এরপরও তার উন্নতি হয়নি। বাইরের হাসপাতালেও একদিন নেওয়া হয়েছিল। অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারও আমাদের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হলো।
অধ্যাপক হাবিবুর আরও বলেন, কোনো রোগীর হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে রক্ত কাজ করে না। এজন্য বিশেষ রক্ত লাগে, সেটিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর রেসপন্স করেনি। বাড়িতে থাকার সময় অবস্থা খারাপ হলেও সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি। কিছুটা অবহেলা তো ছিলই।
শামীমার ভাই শাহজাদা বলেন, বোনকে বাঁচাতে পারলাম না। এখন গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি।
গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সারাহ ইসলাম নামে ২০ বছরের এক তরুণীকে ব্রেন ডেড ঘোষণা করেন বিএসএমএমইউ চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় দুই নারীর শরীরে। ওই তরুণীর চোখের কর্নিয়া দেওয়া হয় অন্য দুজনকে।
Advertisement
এএএম/এমকেআর