আর কিছুদিন পরই শুরু হবে ইউরোপের জমজমাট ফুটবল লড়াই- ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। স্বাগতিক দশে হচ্ছে জার্মানি। এ নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে ইউরোপের ফুটবল পাওয়ার হাউজগুলো। এরই মধ্যে স্বাগতিক জার্মানি তাদের ইউরোর জার্সি প্রকাশ করেছে।
Advertisement
এই জার্সিগুলোর মধ্যে একটি নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। জার্মানির একটি জার্সির নাম্বার হলো ‘৪৪’। জার্সির মধ্যে সংখ্যার যে ডিজাইন করা হয়েছে, তাতে জার্মানির একনায়ক এডলফ হিটলারের কুখ্যাত নাৎসি বাহিনীর একটি প্রতীকের সাদৃশ্য পাওয়া গেছে। এ নিয়েই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এ কারণে ‘৪৪’ নাম্বার জার্সি প্রত্যাহ্যারের ঘোষণা দিয়েছে জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি)। তারা জানিয়েছে, নাম্বার ‘৪’ এর যে ডিজাইন করা হয়েছে, প্রয়োজনে সেটাতে পরিবর্তন করা হবে।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য তৈরি করা জার্সিটির উদ্বোধন হয়েছে গত সপ্তাহে জার্মানির ফ্রান্সের বিপক্ষে জেতা ২-০ গোলের ম্যাচে। এরপরই ‘৪৪’ নাম্বার জার্সি নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। কারণ দুটি ‘44’ একসঙ্গে নাৎসি পার্টির শুটজস্টাফেল গ্রুপের ব্যবহৃত স্টাইলাইজড 'SS'(এসএস)- এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
Advertisement
প্রসঙ্গত, শুটজস্টাফেল অ্যাডলফ হিটলারের তৃতীয় রাইখের একটি আধাসামরিক সংস্থা। সংস্থাটি ইউরোপজুড়ে ইহুদি জনগণের ওপর গণহত্যা চালায় । এই জার্সিটি নিয়ে প্রথম উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইতিহাসবিদ মাইকেল কোনিগ। তিনি বলেছিলেন জার্সিতে থাকা নকশা ‘খুবই সন্দেহজনক’।
এছাড়া জার্সির গোলাপী রঙ নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সমর্থকরা বলছেন যে এটি জার্মানির বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করছে। তবে সমালোচকরা দাবি করেন, এটি সংস্কৃতির অংশ নয় এবং জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (ডিএফবি) ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের নকশা করেছে।
জার্মান ফুটবল সংস্থা ডিএফবি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ডিএফবি ০-৯ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো চেক করে দেখেছে। এরপর ১-২৬ নাম্বার পর্যন্ত সংখ্যার সার্জিগুলো রিভিউ করার জন্য উয়েফার কাছে জমা দিয়েছে। জার্সি ডিজাইন করার সময় কেউই ইচ্ছাকৃতভাবে নাৎসি প্রতীকের সাদৃশ্য হয়, এমন কিছু ব্যবহার করেনি।’
‘তবুও আমরা জার্সি নিয়ে সমালোচনা খুব ভালোভাবেই গ্রহণ করেছি। যে কারণে আমরা চাই না, এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা কিংবা সমালোচনার জন্ম হোক। প্রয়োজনে আমরা ৪- সংখ্যাটার ডিজাইন পরিবর্তন করবো এবং এটা করা হবে উয়েফার তত্বাবধানে।’
Advertisement
অ্যাডিডাসের মুখপাত্র অলিভার ব্রুগেন নাৎসি প্রতীকের সঙ্গে মিল করে নাম্বারের ডিজাইন ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে বলে অস্বীকার করেন। তিনি জানিয়ে দেন, এই ডিজাইনের জন্য ফেডারেশন এবং ১১টিমস্পোর্টসই দায়ী।
তিনি বলেন, ‘এডিডাসে প্রায় ১০০টিরও বেশি দেশের মানুষ কাজ করে। একটি কোম্পানি হিসেবে আমরা বৈচিত্র্যতায় বিশ্বাস করি। আমরা জেনোফোবিয়া, ইহুদি বিদ্বেষ, সহিংসতা এবং ঘৃণার বিরোধিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা জার্সি কাস্টমাইজ করা নিষিদ্ধ করব।’
প্রসঙ্গতঃ জার্মানিতে স্টাইলাইজড 'SS'(এসএস) এখনও নিষিদ্ধ।
আইএইচএস/