কাগজে-কলমে দুই শক্তিশালী দল প্রাইম ব্যাংক ও শেখ জামালের সঙ্গে চমক জাগানো জয় উপহার দিলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে কেমন যেন আড়ষ্ট-অনুজ্জ্বল ও ম্যাড়ম্যাড়ে মোহামেডানের ব্যাটিং।
Advertisement
আজ (মঙ্গলবার) ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বৈরথে আবাহনীর বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় পুঁজি গড়তে পারেনি মোহামেডান। ১৯০ রানে শেষ হয়ে গেছে সাদা-কালোদের ইনিংস।
অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছাড়া শেষ দিকে আবু হায়দার রনি ও আরিফুল কিছুটা প্রতিরোধের দেয়াল গড়ার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু ব্যাটারদের মধ্যে রিয়াদ একাই মাথা তুলে লড়াই করার চেষ্টা করেছেন।
আবাহনীর তিন পেসার তানজিম সাকিব, সাইফুদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ এবং তিন স্পিনার তানভির ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম এবং অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সাহসী বোলিংয়ের বিপক্ষে মোহামেডানের টপঅর্ডার একদমই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।
Advertisement
ওপেনার এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের ছেলে রনি তালুকদার ১০, অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ২, রুবেল মিয়া ১১, মোহামেডানের আশা ভরসার নায়ক হয়ে দেখা দেয়া এবারের লিগের সেনসেশন মাহিদুল ইসলাম অংকন ৫ এবং আরিফুল ইসলাম ১৯- এই ছিল মোহামেডানের স্বীকৃত ব্যাটারদের ব্যাটিংয়ের হাল-হাকিকত।
৫৭ রানের ইনিংসের অর্ধেকের পতন হওয়ার পর অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ একা দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে একটি অর্ধশত উপহার দেন এবং যখন রিয়াদ উইকেটে ওয়েল সেট হয়ে গিয়েছিলেন ঠিক তখনই আবাহনীর বাঁ-হাতি স্পিনার রাকিবুলের একটি উইকেট সোজা বলে অযথা রিভার্স-সুইপ খেলতে গিয়ে ৫৪ রানে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি।
৮৩ বলে সাজানো এ ইনিংসে রিয়াদ আবাহনীর তথা বাংলাদেশ জাতীয় দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার বোলার তাসকিন আহমেদের এক ওভারে দুটি ছক্কা এবং তানজিম সাকিবের বলে এক্সট্রা কাভারের উপর দিয়ে একটি ছক্কাসহ ৮৪ বলে ১টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৪ রান করে আউট হন।
এছাড়া শেষ দিকে আবু হায়দার রনি ১৫ বলে ২২ এবং আরিফুল হক ৫৪ বলে ৩৩ রান করলে মোহামেডানের স্কোর ১৯০ পর্যন্ত যায়। যদিও এক সময় মনে হচ্ছিল মোহামেডানের রান ১৫০ পর্যন্ত যাবে কিনা সন্দেহ।
Advertisement
রাজধানীর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনেক দিন খেলা হচ্ছে না তাই ঢাকার অদূরে একদম সন্নিকটে ফতুল্লা স্টেডিয়ামই একমাত্র ভেন্যু। এখানেও আগের চাইতে রান একটু কম হচ্ছে এবং বৃষ্টি হয়েছে কয়েকদিন। তারপরেও ১৯০ রান এখানে ডিফেন্ড করা খুবই কঠিন হবে তাও আবাহনীর বিপক্ষে যে দলটি সাত ম্যাচের সবকটিতে জিতেছে। তাদের ব্যাটার এবং বোলাররা আছেন ফর্মের তুঙ্গে। আছেন নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়- যিনি আগের ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেছেন, আছেন তাওহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, জাকের আলী অনিক।
সবকিছু মিলে আবাহনীর অনেক শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। এই ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে ১৯০ রানের মাঝারী পুঁজি নিয়ে মোহামেডান কতটা লড়াই করে সেটাই দেখার বিষয়।
তবে আজকের ম্যাচটার একটা অন্যরকম গুরুত্ব আছে। আজ যদি মোহামেডান আবহানীকে হারাতে পারে তাহলে লীগ টেবিলে মোহামেডান এবং আবাহনী এক সমান হয়ে যাবে।
আবাহনীর এখন আছে সাত খেলায় সাত জয় ১৪ পয়েন্ট, মোহামেডানের আছে সাত খেলায় ছয় জয় ১২ পয়েন্ট। আজকে মোহামেডান আবাহনীকে হারাতে পারলে মোহামেডানেরও সাত জয় হয়ে যাবে এবং আবাহনীর সাত জয়ই থাকবে।
তাই দেখার বিষয় মোহামেডান চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে যৌথভাবে শীর্ষে চলে যেতে পারি কি না।
এআরবি/আইএইচএস