দেশজুড়ে

সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু, পালালো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

গাজীপুরের শ্রীপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেলে উত্তেজিত স্বজনেরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

রোববার (৩১ মার্চ) রাত পৌনে ১২টায় জেলার শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। রাত সোয়া ১২টার দিকে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা ও শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

নিহত ইয়াছমিন আক্তার (৩০) গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা পালপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আসাদুল্লাহর স্ত্রী। তিনি রোববার বিকেলে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

নিহতের স্বামী মো আসাদুল্লাহ জানান, রোববার দুপুর ১২টার দিকে ইয়াসমিন প্রসব বেদনা নিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই প্রসূতির সিজার করার কথা জানান। পরবর্তীতে ১৪ হাজার টাকায় তারা সিজারে চুক্তিবদ্ধ হন এবং রমজান মাস থাকায় ইফতারের পর সিজার করা হবে বলে জানানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকেল চারটার দিকে হঠাৎ সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। সিজারের পর ওই প্রসূতি এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে প্রসূতিকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলে প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

Advertisement

তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিষয়টি জানালে তারা প্রসূতিকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করেন। এরপরও রক্তক্ষরণ না থামায় রাত ৯টার দিকে প্রসূতি নিস্তেজ হয়ে পড়লে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে প্রসূতির স্বজনেরা পার্শ্ববর্তী হাসপাতাল থেকে অন্য ডাক্তার এনে রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, এ সময় তার পালস্ পাওয়া না গেলে কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান তিনি।

নিহতের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের গাফিলতিতে দুইজন শিশু আজ এতিম হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির বলেন, খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি, তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। নিহতের স্বজনদের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনা শুনে রাত ১২টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা। তিনি বলেন, ঘটনা শুনে হাসপাতালে গিয়ে প্রসূতির স্বজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। হাসপাতালের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

Advertisement

এফএ/জেআইএম