বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, এই দেশের পতাকা, এই দেশের মানচিত্র, এই দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে যে সংগঠন, সেই সংগঠনের কর্মী হওয়ার কারণে কাউকে যদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তাহলে বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের পক্ষে আমরা ঘোষণা করতে চাই, মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে গেছে। এই ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ রাখার নাটক বাংলাদেশ থেকে বন্ধ করতে হবে।
Advertisement
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালুর দাবি ও বুয়েটের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, আমরা এখানে লড়াই করছি মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যে অন্যায্য, সংবিধানবিরোধী, মৌলিক মানবাধিকারবিরোধী এবং একইসঙ্গে সুস্পষ্ট, খোলামেলা, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তাদের উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা শহীদ মিনারে দাঁড়িয়েছি। কী অপরাধ করেছে আমাদের রাব্বি? তার অপরাধ, ১৭ মার্চ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে যাদের জন্য জাতির পিতা লড়াই করেছেন তাদের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছে। ২৬ মার্চ এ স্বাধীনতা দিবসের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছে। এটাই রাব্বির অপরাধ।
আরও পড়ুন: বাঘে ধরলে আঠারো ঘা, ছাত্রলীগ ধরলে ছত্রিশ ঘা ছাত্রলীগের সমাবেশের মাইক দেওয়া হয়েছে বুয়েটের দিকে বুয়েটের ঘটনা তদন্ত হচ্ছে: ওবায়দুল কাদেরছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, আমি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি, অনেকবারই যাই। অনেকে এটাকে অনুপ্রবেশ বলার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায়, নাগরিক হিসেবে আমার যাওয়ার অধিকার রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক সম্পর্ক, পারিবারিক সম্পর্ক কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কাটানোর জন্য আমরা যেতে পারি। সংবিধান প্রদত্ত অধিকার হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। কাদের কাছে পারমিশন নিতে হবে? কাদের অনুমতি নিতে হবে? বাংলাদেশের সংবিধান আমাদের যে অধিকার দিয়েছে সে অধিকারকে আপনার মামাবাড়ির আবদারের মতো ঠুনকো বানিয়ে দেবেন, আর আমরা কি সেটা মেনে নেব? এই আশা যারা করছে তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।
Advertisement
সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজকে একটি নন-ইস্যুকে ইস্যুতে পরিণত করা হচ্ছে। শুধু বুয়েট কেন, পৃথিবীর যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। সৌজন্যের মিথস্ক্রিয়া করার অধিকার রয়েছে। বরং আপনারাই সেই অধিকার বন্ধ করে দিয়েছেন। ছেলেমেয়েদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার বন্ধ করে দিয়েছেন। ছেলেমেয়েরা রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা প্রকাশ করবে সেটি আপনারা বন্ধ করেছেন। এসব বন্ধ করার নামে সেখানে অন্ধকারের রাজনীতি চালু করেছেন। রাব্বির সিট বাতিল হয়েছে ছাত্র রাজনীতি করার কারণে। আমরা বুয়েটের ভিসিকে বলতে চাই, টাঙ্গুয়ার হাওড়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড করার জন্য ৩৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিল, মামলা হয়েছিল। রাষ্ট্রবিরোধী আসামিরা কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে ক্লাস করছে, পরীক্ষা দিচ্ছে। আর তারাই কে ক্লাসে থাকবে, কে পরীক্ষা দেবে না সেটি নির্ধারণ করছে।
তিনি বলেন, আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করছি, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যানসার কালচার বাস্তবায়ন করেছে। যে রাজনীতি করছে তার সঙ্গে মেলামেশা করা যাবে না। ১৭ মার্চের কর্মসূচি, ২৬ মার্চের কর্মসূচি পালন করছে তাকে বয়কট করতে হবে। তাকে সোশ্যাল আইসোলেশনের জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। এ ধরনের কার্যক্রম যারা বাস্তবায়ন করতে চায়, তাদেরই সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। আজকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমাদের স্পষ্ট আহ্বান থাকবে, অনতিবিলম্বে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চালু করতে হবে। নিয়ম আপনারা চালু করেছেন এটি কালাকানুন। এই কালো আইন কোন আদালতে, কোন সংবিধানের টেকার কথা নয়।
ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসেন সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তর, মহানগর দক্ষিণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বাঙলা কলেজসহ রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইউনিট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসান আলী/জেএইচ/জেআইএম
Advertisement