ঈদুল ফিতরে যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে সারাদেশে আট জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশেষ এ ঈদ স্পেশাল ট্রেনের একটিও পাচ্ছে না রাজশাহী।
Advertisement
শুধু রাজশাহী-ই নয়, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের আওতাধীন খুলনাও পায়নি বিশেষ ট্রেন। শুধু জয়দেবপুর-পার্বতীপুর রুটে ঈদের আগে তিনদিন ও ঈদের পরের দিন থেকে তিনদিন একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করবে।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্তে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজশাহীর সামাজিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে বারবার এমন বৈষম্যের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে বিশেষ ট্রেন দেওয়ার দাবি তাদের।
Advertisement
সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘রাজশাহী শিক্ষানগরী। এখানে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, বেসরকারি ও সরকারি কর্মচারীরা থাকেন। তাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরাতে রেলওয়ের উচিত ছিল একটি হলেও ঈদ স্পেশাল ট্রেন সংযোগ করা। কিন্তু তারা এটি করেননি। বরাবরই এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে তারা বৈষম্য করে আসছেন। এটি কেন হচ্ছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে রাজশাহীর সঙ্গে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেনের সংযোগের দাবি জানাই। যাতে নিরাপদে রাজশাহী বা এ অঞ্চলের মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সমস্যা, চাওয়া-পাওয়া দেখার জন্য জনপ্রতিনিধি আছেন। এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিদেরই প্রধান দায়িত্ব এসব দেখাশোনা করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা। কিন্তু আমাদের জনপ্রতিনিধিরাই আজকাল বাস-ট্রেনে চড়েন না, দামি গাড়ি আর বিমানে চড়েন। কাজেই এ নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই।’ এ বিষয়ে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, রাজশাহীতে ঈদ স্পেশাল ট্রেন নেই। রংপুর-খুলনায়ও নেই, শুধু জয়দেবপুর থেকে পার্বতীপুর একটা ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলবে।
তিনি বলেন, রংপুর রুটে বুড়িমারী এক্সপ্রেস চালু হয়েছে। যে কারণে ওই বিভাগে একটা ঈদ স্পেশাল দেওয়া হয়েছে। আর খুলনা-রাজশাহী বিভাগে কখনো ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছিল না। পঞ্চগড় বা চিলাহাটি এলাকার লোকজন অনেক বেশি, রাস্তাঘাট ভালো না। সেজন্য দেওয়া (ঈদ স্পেশাল) হয়।
Advertisement
ঈদ স্পেশাল ট্রেন রেল পূর্বাঞ্চলের দখলে থাকার কারণ জানতে চাইলে অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া...ওদিকের যাত্রী চাপটা অনেক বেশি। তারা স্বাভাবিকভাবে ছাদেই ভ্রমণ করতে চান। দেওয়ানগঞ্জে ট্রেনগুলো যায়, একদম ঠাসা থাকে।’ রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। রাজশাহীতে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। দেখা যাক তারা কী করে।’
সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/এএসএম