খামারের দেড়শ মুরগি বিক্রি করে পরিবারে সবার জন্য ঈদে নতুন জামা কেনা এবং স্কুলের বেতন দেওয়ার কথা ছিল। বাকি টাকা দিয়ে আবারও নতুন করে মুরগির বাচ্চা কিনে খামারটা চালু রাখতাম। কিন্তু সেটি হলো না। আমাদের পরিবারের সবার ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেলো। আমার যে ক্ষতি হয়েছে, এখন ঘুরে দাঁড়াতেও অন্তত ছয়মাস সময় লাগবে।
Advertisement
অশ্রুসিক্ত নয়নে আক্ষেপ করে এভাবেই কথাগুলো বলছিল স্কুলছাত্র হৃদয়। সে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের টেপিপাড়ার হামিদুল ইসলামের ছেলে। হৃদয় গাংনী হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) দিনগত রাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে হৃদয়ের খামারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেড় শতাধিক মুরগি পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
হৃদয়ের বাবা হামিদুল ইসলাম জানান, তিনি নিজে ও ছেলে হৃদয় মিলে বাড়ির ছাদে মুরগির খামারটি দিয়েছিলেন। এখান থেকে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসারের খরচাদি ও ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ চলছিল। গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে খামারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সেইসঙ্গে একধরনের গ্যাস ছেড়ে দেয়। এতে গরমে সব মুরগি মারা যায়।
Advertisement
তিনি বলেন, মধ্যরাত থেকে মরতে থাকে মুরগিগুলো। মৃতপ্রায় কিছু মুরগি প্রতিবেশীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি মুরগি মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে বলেও জানান হামিদুল ইসলাম।
হৃদয়ের মা বেলী খাতুন বলেন, অন্যান্য দিনের মতো মধ্যরাত পর্যন্ত ছাদে মুরগির খামারে আমরা কাজ করেছি। ঘরে আসার কিছুক্ষণ পর মুরগির সাড়াশব্দ না পেয়ে গিয়ে দেখি, একের পর এক মুরগি মরে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কারো সঙ্গে আমাদের তেমন শত্রুতা নেই। তবে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে একজনের সঙ্গে। তিনিই এ ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে ধারণা বেলী খাতুনের।
গাংনী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোজিৎ কুমার নন্দী বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এসআর/জেআইএম