আন্তর্জাতিক

যুদ্ধের বিরোধিতা করায় রাশিয়ায় সাংবাদিকের ২ বছরের কারাদণ্ড, আটক ৫

ইউক্রেন যুদ্ধের বিরোধিতা করায় রাশিয়ায় মিখাইল ফেল্ডম্যান নামে এক সাংবাদিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাশিয়ার একটি আদালত তার বিরুদ্ধে এই রায় দেন। এছাড়া একই দিনে আরও পাঁচ সাংবাদিককে আটক করেছে মস্কো পুলিশ।

Advertisement

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়েছিলেন মিখাইল ফেল্ডম্যান। রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় কালিনিনগ্রাদের একটি আদালত জানান, ওই সাংবাদিক ভিকন্টাক্টে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে করা একাধিক পোস্টে রুশ বাহিনীকে অসম্মান করেছেন।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় কয়েক শত ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাশিয়ার সামরিক সেন্সরশিপ আইন অনুযায়ী, যেসব নাগরিক অনলাইনে পুতিন প্রশাসন কিংবা রুশ বাহিনীর আক্রমণাত্মক সমালোচনা করেন কিংবা যেসব সাংবাদিক সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য ছাড়া অন্য কোনো তথ্য ব্যবহার করেন, তাদের কয়েক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ায় আটক হওয়া পাঁচ সাংবাদিকের একজন হচ্ছেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সোটাভিশনের সাংবাদিক অ্যান্তোনিনা ফাভরস্কায়া। প্রয়াত বিরোধী রাজনীতিক অ্যালেক্সেই নাভালনির সমাধিতে ফুল দেওয়ার জন্য তিনি সম্প্রতি ১০ দিনের জন্য কারাবন্দী ছিলেন। বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

জানা গেছে, ফাভরস্কায়ার সহকর্মী আলেকজান্দ্রা আস্তাখোভা ও আনাস্তাসিয়া মুসাতোভা আটক কেন্দ্রে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলে তাদেরও আটক করে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ সোটাভিশন থেকে আরেক সাংবাদিক একেতেরিনা অ্যানিকিয়েভিচ ও রুশনিউজের সাংবাদিক কনস্ট্যান্টিন ঝারভকে গ্রেফতার করে। তারা ফাভরস্কায়ার বাড়ির কাছে চিত্রগ্রহণ করছিলেন।

কনস্ট্যান্টিন ঝারভ বলেন, আটকের সময় পুলিশ আমাকে লাথি মেরেছে, আমার মাথায় পা রেখেছে ও আমার পা দুটি পেঁচিয়ে রেখেছিল। আমি যখন উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম, তখন পুলিশ আমাকে নিয়ে উপহাসও করেছিল। পরে তারা বিস্ফোরক আছে কি না, তা দেখতে আমার ব্যাগে তল্লাশি চালায়।

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার অধিকাংশ স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে নিষিদ্ধ কিংবা সেন্সরশিপের মাধ্যমে কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করেছে মস্কো। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনেক স্বাধীন সাংবাদিক রাশিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আর যারা এখনো দেশটিতে আছেন, তারা ঝুঁকিতে রয়েছেন।

অন্যদিকে, স্থানীয় সাংবাদিক ছাড়াও, গত বছরের মার্চে মার্কিন সাংবাদিক ইভান গারশকোভিচ ও মে মাসে আরেক মার্কিন সাংবাদিক আলসু কুরমাশেভাকে গ্রেফতার করে রাশিয়া। তারা বিচারের অপেক্ষায় রাশিয়ার কারাগারে রয়েছেন।

Advertisement

সূত্র: এএফপি

এসএএইচ