ইতালির রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসে উদযাপিত হয়ে গেলো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।
Advertisement
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সকাল ৯টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এতে স্থানীয় রাজনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সাংবাদিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত স্বাগত বক্তব্য দেন। এসময় আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের উপর অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশি নেতৃবৃন্দ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। আলোচনায় বক্তারা জাতির পিতার স্বপ্নের 'সোনার বাংলা' গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নেন।
Advertisement
এসময় রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচক্ষণতার সঙ্গে এবং নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
রাষ্ট্রদূত ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপের বিষয় উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে অচিরেই প্রবাসী বাংলাদেশীরা এর সুফল পেতে শুরু করবেন। সবাইকে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুগ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ায় অবদান রাখার জন্য আহ্বান করেন।
একই দিন সন্ধ্যায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোমের একটি পাঁচ তারকা হোটেলের হলে কূটনৈতিক অভ্যর্থনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ইতালি সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিনিস্টার প্লেনিপটেনশিয়ারি মিজ আলেসান্দ্রা স্কিয়াভো প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ইতালিয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন স্তরের সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তা, রোমে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থাসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধি ও কূটনীতিক, বিদেশী সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, গবেষক, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ ইতালিতে বিভিন্ন জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে সেদিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাষ্ট্রদূত সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ও সাফল্যসমূহ তুলে ধরেন। জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার মত বৈশ্বিক অভীষ্টসমূহের বিষয়ে বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অবস্থান উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবে। বাংলাদেশ ও ইতালির বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি দু'দেশের বহুমাত্রিক সহযোগিতা আরও জোরদারের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
Advertisement
এরপর, রাষ্ট্রদূত বিশিষ্ট অতিথিদের নিয়ে জাতীয় দিবসের কেক কাটেন।পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও বৈশ্বিক অর্জন তুলে ধরে নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এসআইটি/জিকেএস