রাজনীতি

দীর্ঘদিন পর এক টেবিলে বিএনপি-জামায়াত

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দীর্ঘদিনের মিত্র ও জোটসঙ্গী জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে বিএনপির। এরপর বিভিন্ন সময়ে এ দুই দলের শীর্ষ নেতারা পারস্পরিক বাকযুদ্ধে জড়ান। এক পর্যায়ে ভাঙন ধরে ২০ দলীয় জোটে। এরপর থেকে দল দুটির নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কাছাকাছি হতে দেখা যায়নি।

Advertisement

সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে সরকারবিরোধী আন্দোলনেও বিএনপি ও জামায়াতের প্ল্যাটফর্ম ছিল ভিন্ন। পৃথক অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন দুই দলের নেতাকর্মীরা। অবশেষে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর একমঞ্চে দেখা গেলো বিএনপি-জামায়াদের শীর্ষ নেতাদের।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। সেখানেই একমঞ্চে ক্যামেরাবন্দি হন জামায়াত নেতারা।

এর আগে শেষ কবে এ দুই দলের নেতারা মুখোমুখি বসেছিলেন সেটি খুঁজতে ফিরে যেতে হবে পাঁচ বছর আগে। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি সবশেষ ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের। দীর্ঘ বিরতির পর ও জোটে ভাঙনের গুঞ্জনের মধ্যেই তাদের আবারও একমঞ্চে পাশাপাশি বসা রাজনীতিতে নতুন বার্তা বা ইঙ্গিত বলে মনে করছেন অনেকে। তবে এ নিয়ে দল দুটির কারও পক্ষ থেকেই কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

এদিন ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এসময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি গোটা জাতির ওপর চেপে বসে আছে। আমাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ করে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।

আরও পড়ুন

দুঃসময় চলছে, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন: ফখরুল বিএনপি-জামায়াত সম্পর্ক কোন পথে?  

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে। আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। সে আন্দোলনে বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

Advertisement

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার। লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ মাহমুদ চৌধুরী, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত সেলিম, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

বক্তব্য শেষে ইফতারের আগে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক টেবিলে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন এবং দুজনের মধ্যে তখন একান্ত আলাপচারিতা হতে দেখা যায়।

কেএইচ/এমকেআর/জেআইএম