চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বিস্তীর্ণ জমিতে বিভিন্ন রকম ডাল চাষ করেছেন কৃষকেরা। প্রতি বছর ভালো লাভ হওয়ায় দিন দিন চাষের পরিধি বাড়ছে বলে জানায় উপজেলা কৃষি অফিস। দুই ফসলি জমির ফসল কাটার পর খালি পড়ে থাকে। সেই খালি জমিতে বিভিন্ন ডাল চাষ করা হয়। স্থানীয় বাজারগুলোতে ডালের ব্যাপক চাহিদা আছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয় এ ডাল।
Advertisement
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ৬ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে মুগ, হেলন, মশুর ও খেসারি চাষ করা হয়েছে। ২৮৫০ হেক্টর জমিতে মুগ, ২৬০০ হেক্টর জমিতে হেলন, ৭২০ হেক্টর জমিতে খেসারি ও ৪০ হেক্টর জমিতে মশুর ডাল চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ইছাখালী, সাহেরখালী ও মঘাদিয়া ইউনিয়নে।
উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকায় দেখা যায়, চরের জমিগুলোর যেদিকে চোখ যায় শুধু ডাল আল ডাল। কোথাও হেলন, কোথাও মুগ আবার কোথাও খেসারি ডালের চারাগুলো বাতাসে দুলছে। কিছু গাছে ফসল এসেছে। কিছু গাছ ফলনের অপেক্ষায় আছে।
কথা হয় স্থানীয় কৃষক শাহজাহানের সাথে। তিনি জানান, চলতি বছর ৪ একর জমিতে মুগ ডাল চাষ করেছেন। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে কৃষকেরা ফলন তুলতে শুরু করেছেন। অনেকে স্থানীয় বাজারে গোটা মুগ বিক্রি করছেন।
Advertisement
আরও পড়ুন
শরীয়তপুরে বাড়ছে রবি ফসল ‘কালোজিরা’র চাষ পাহাড়ে হলুদ চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরাউপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়াহেদপুর এলাকার চাষি আলা উদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রায় ৩২ বছর ধরে অন্য ফসলের পাশাপাশি এ সময়ে বিভিন্ন রকম ডাল চাষ করে আসছি। প্রতি বছরই ঘরের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করি। এবারো ভালো লাভ হবে বলে আশাবাদী।’
উপজেলার বড় দারোগাহাট, আবুতোরাব, মিঠাছড়া, আবুরহাট বাজারে মুগ ডালের বড় বাজার বসে। স্থানীয়দের পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহর থেকে পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যান।
স্থানীয়রা জানান, ডাল লাভজনক শস্য। কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়। তেমন সেচ দিতে হয় না। মাঝে মাঝে আগাছা পরিষ্কার করতে হয়। তবে ফলন ঘরে তোলার আগে বৃষ্টি হলে ফসল নষ্ট হওয়ার ভয় থাকে।
Advertisement
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘চলতি বছর উপজেলায় ৬ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে মুগ, হেলন, মশুর ও খেসারি ডাল চাষ করা হয়েছে। মিরসরাইয়ে দিন দিন চাষের পরিমাণ বাড়ছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকি। বৃষ্টি না হলে এবার ভালো ফলন হবে।’
এসইউ/এএসএম