অর্থনীতি

শিবলী কমিশনের শেষ সময়ে কঠিন চাপে শেয়ারবাজার

চারদিকে মহামারি করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। মৃত্যুভয়ে ঘর থেকে বের হওয়া প্রায় বন্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্য ফেলে সবাই জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। ঠিক চার বছর আগে মৃত্যু তাড়া করে ফেরা অতিমারির এমনই অজানা আতঙ্কের দিনগুলোতে ভয়াবহ দরপতন দেখা দিলে বন্ধ করে দেওয়া হয় শেয়ারবাজারের লেনদেন।

Advertisement

এমন কঠিন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্ব নিয়ে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম নেতৃত্বাধীন কমিশন। এতে মন্দার শেয়ারবাজারে ধীরে ধীরে গতি ফিরে আসে।

কঠিন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্ব নিয়ে যে কমিশন বিনিয়োগকারীদের মুখে হাসি ফোটায়, সেই কমিশনের মেয়াদের শেষ দিকে এসে কঠিন চপের মুখে পড়েছে শেয়ারবাজার। অব্যাহত দরপতনের মধ্যে প্রতিনিয়ত পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী।

এমন পতনের প্রকৃত কারণ যেন খুঁজে পাচ্ছে না কোনো পক্ষই। ফলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর আর্তনাদও থামছে না। বরং দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ তত বাড়ছে। ফলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপরও ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের।

Advertisement

স্বাভাবিকভাবেই একটি অংশ কমিশনের বিপক্ষে রয়েছে। তারা চান না এই কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হোক। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই অংশ বাজারে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ফলে বাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে এবং দরপতন হচ্ছে। এর সঙ্গে ব্যাংকের সুদ হার বেড়ে যাওয়া শেয়ারবাজারের জন্য নেতিবাচক হয়ে এসেছে। সবকিছু মিলিয়েই বাজারে দরপতন চলছে

শেয়ারবাজারের এই দরপতনকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বাজারে দরপতনের পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে। তবে সেসব কারণে বাজারে যে হারে দরপতন হওয়ার কথা, প্রকৃতপক্ষে দরপতনের মাত্রা তার থেকে বেশি। এখন বাজারে যে হারে দরপতন হচ্ছে তার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই।

আরও পড়ুন

বেহাল শেয়ারবাজার, নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই আরও সাত হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারালো

করোনা আতঙ্কে ২০২০ সালের শুরুর দিকে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামলে লেনদেন বন্ধ করে দেন বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের মে মাসে বিএসইসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে যোগ দেন আরও তিনজন। বিএসইসির দায়িত্ব নিয়ে নতুন কমিশন টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকা শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন চালু করেন ওই বছরের ৩১ মে।

Advertisement

শেয়ারবাজারে দরপতন থামছেই না

বন্ধ থাকা লেনদেন চালু করার পাশাপাশি অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেয় শিবলী কমিশন। অনিয়মে জড়িত থাকায় একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-কে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়। পরবর্তীকালে আইসিবি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাতিল করা হয় এক ডজন দুর্বল কোম্পানির আইপিও।

এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের প্রশংসা কুড়ান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারেও। করোনা মহামারির মধ্যেই ঘুরে দাঁড়ায় শেয়ারবাজার। ৫০ কোটি টাকার ঘরে নেমে যাওয়া লেনদেন হু হু করে বেড়ে হাজার কোটিতে উঠে যায়।

এই দরপতনকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বাজারে দরপতনের পেছনে কয়েকটি কারণ কাজ করছে। তবে সেসব কারণে বাজারে যে হারে দরপতন হওয়ার কথা, প্রকৃতপক্ষে দরপতনের মাত্রা তার থেকে বেশি। এখন বাজারে যে হারে দরপতন হচ্ছে তার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই

এরপর মাঝে কয়েক দফায় উত্থান-পতন চললেও বর্তমানে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা পতনের মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজার। চার বছরের জন্য দায়িত্ব পাওয়া শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম এবং তিন কমিশনারের মেয়াদ প্রথম দফায় শেষ হচ্ছে আগামী মে মাসে। নতুন করে তাদের নিয়োগ নবায়ন করা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি।

চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হওয়ার পেছনে কোনো বিশেষ চক্রের হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান কমিশনের আমলে কোনো কোনো বড় বিনিয়োগকারী বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। বড় অনিয়ম করার পরও তাদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আবার কিছু বিনিয়োগকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব কারণে স্বাভাবিকভাবেই একটি অংশ কমিশনের বিপক্ষে রয়েছে। তারা চান না এই কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হোক। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই অংশ বাজারে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ফলে বাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে এবং দরপতন হচ্ছে। এর সঙ্গে ব্যাংকের সুদ হার বেড়ে যাওয়া শেয়ারবাজারের জন্য নেতিবাচক হয়ে এসেছে। সবকিছু মিলিয়েই বাজারে দরপতন চলছে।

পুঁজি হারিয়ে মাথায় হাত বিনিয়োগকারীদের

‘প্রথম দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ভালো পদক্ষেপ নিয়ে প্রশংসা অর্জন করলেও, শেষ দিকে বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন ফ্লোর প্রাইস দিয়ে বাজার আটকে রাখা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। এরপর সম্প্রতি জেড গ্রুপ নিয়েও বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই গ্রুপ নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই অব্যাহত পতনের ধারা বাজারে’- বলেন ডিএসইর ওই সদস্য।

কীসের ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেড গ্রুপে যাবে, সে বিষয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। ওই নির্দেশনার শেষ পয়েন্টে বলা হয়- ইস্যুয়ার কোম্পানির পরবর্তী লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণা অথবা বার্ষিক/অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার দিন থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

আরও পড়ুন

সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিয়ে যাবোশেয়ারবাজারে ধস, ৩৪ মাসের মধ্যে সূচক সর্বনিম্নবিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনা থাকলেও ডিএসই থেকে হুট করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২২ কোম্পানিকে জেড গ্রুপে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ঘোষণা আসে নতুন করে আর কোনো কোম্পানিকে জেড গ্রুপে নেওয়া হবে না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আরও কয়েকটি কোম্পানিকে এই গ্রুপে নেওয়া হয়।

এভাবে কিছু কোম্পানিকে জেড গ্রুপে নেওয়ার পর থেকেই শেয়ারবাজার দরপতনের মধ্যে পড়ে। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই দরপতনে এরই মধ্যে ডিএসইর বাজার মূলধন থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকার ওপরে নেই হয়ে গেছে। আর এসময়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৬১৩ পয়েন্ট।

ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারীদের ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই অর্থ এখনো ছাড় হয়নি। এই অর্থ যেন দ্রুত ছাড় করা হয়, কমিশন সে চেষ্টা করছে। পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে সব পক্ষের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে

এই দরপতনের কারণ হিসেবে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে মন্দার জন্য অনেক কারণ থাকতে পারে। এর একটা কারণ হলো বাজারের প্রতি অনাস্থা। অনেক বিনিয়োগকারীর কোটি কোটি টাকা দেড় বছর ধরে আটকে ছিল। তাদের মধ্যে একটা অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। নতুন করে বিনিয়োগে আবার টাকা আটকে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগ হবে না, কারণ বিদেশিরা বুঝে গেছে এদেশে বিনিয়োগ করলে টাকা আটকে যায়। দেশীয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে অনাস্থা।

তিনি বলেন, বাজারে গত দেড় বছর ধরে ম্যানুপুলেশন (কারসাজি) হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। বাজারের ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা) ভেঙে গেছে। অনেককে ফেবার করা হচ্ছে, অনেককে নানা ধরনের ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এতে বাজারে সবার জন্য একই নিয়ম অনেক ক্ষেত্রেই বলবৎ থাকছে না। বাজারে সুশৃঙ্খল অবস্থার ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

‘তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি যে লভ্যাংশ দেয় শেয়ারের দাম হিসেবে তার নেট রিটার্ন ৩-৪ শতাংশ। সেখানে ব্যাংকের সুদের হার ১০-১২ শতাংশ। সুতরাং শেয়ারবাজারে মন্দার জন্য এটা অবশ্যই একটা কারণ। তবে আমার মনে হয় প্রধান কারণ সুশাসন ও স্বচ্ছতার অভাব।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় প্রসঙ্গে এই পুঁজিবাজার বিশ্লেষক বলেন, বাজারে সুশাসন ফেরাতে হবে, স্বচ্ছতা ফেরাতে হবে। সব ধরনের ম্যানুপুলেশন বন্ধ করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সুশাসন ও স্বচ্ছতা ফিরলে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও ফিরবে। এছাড়া আইন বা নিয়ম সবার জন্য সমান হতে হবে।

শেয়ারবাজারে চলমান মন্দা পরিস্থিতির কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এটা আমরাও বোঝার চেষ্টা করছি, এরকম তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, এখন বাজারে তো তেমন কোনো নিউজ নেই, তারপরও হচ্ছে (দরপতন)।

বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম

তিনি বলেন, সুদের হার একটা প্রধান ইস্যু। এটা ছাড়া আর তেমন কিছু নেই। আমাদের মনে হয় সুদের হারটাই এখানে মূল বিষয়। বর্তমানে সুদের হার ১১ শতাংশ। ২০১৬-১৭ সালের পর সুদের হার এত বেশি আর ছিল না।

তাহলে কি শেয়ারবাজার থেকে টাকা বের হয়ে ব্যাংকে চলে যাচ্ছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ব্যাংকে যাচ্ছে, ট্রেজারি বন্ডে যাচ্ছে। তবে শেয়ারবাজারে যে দরপতন হচ্ছে, সেটা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয়। সুদের হার বাড়ার কারণে শেয়ারবাজারে দরপতন হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু দরপতন যে হারে হচ্ছে, এটা আমাদের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলছে না।

বিএসইসি চেয়ারম্যানসহ একাধিক কমিশনারের মেয়ার শেষের পথে। তাদের নিয়োগ নবায়ন হবে কি না তা নিয়ে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে। এর কোনো প্রভাব বাজারে পড়ছে কি না? জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম বলেন, এখনো তো অনেক সময় আছে। এর কোনো প্রভাব বাজারে আছে বলে মনে হয় না।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও সংস্থাটির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, শেয়ারবাজারে এখন বিয়ারিশ ট্রেন্ড (মন্দা অবস্থা) চলছে। পেনিক সেল এবং ফোর্স সেলের কারণে এই রিয়ারিশ অবস্থা বিরাজ করছে বলে আমরা মনে করছি। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।

পদক্ষেপের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) থেকে পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারীদের ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই অর্থ এখনো ছাড় হয়নি। এই অর্থ যেন দ্রুত ছাড় করা হয়, কমিশন সে চেষ্টা করছে। পাশাপাশি বাজার উন্নয়নে সব পক্ষের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

‘কেউ বিশেষ উদ্দেশে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে কি না, সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে। কেউ এ ধরনের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’- বলেন তিনি।

আরও পড়ুন

কোথাও কঠোর, কোথাও নমনীয় বিএসইসি! শেয়ারবাজারের ওপর আস্থা হারানোর সুযোগ নেই ‘জেড’ গ্রুপ নিয়ে ‘ভুতুড়ে’ সিদ্ধান্ত, ক্ষতির মধ্যে বিনিয়োগকারীরা

বর্তমান কমিশনের মেয়াদ নবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসি মুখাপাত্র বলেন, আমরা আশাবাদী পুরো কমিশনের মেয়াদ নবায়ন হবে। তবে সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

সূচক নেই প্রায় ৬১৩ পয়েন্টদীর্ঘদিন পর ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া সাময়িক মূল্য সংশোধনের পর শেয়ারবাজার কিছুটা গতি ফিরে পায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় প্রায় প্রতিদিন বাড়তে থাকে মূল্যসূচক। এতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে উঠে আসে। কিন্তু চলমান ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যে পড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক এখন ৫ হাজার ৮৩৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। অর্থাৎ, মাত্র দেড় মসের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমছে ৬১৩ পয়েন্ট।

বাজার মূলধন নেই ৯২ হাজার কোটি টাকাগত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এখন সেই বাজার মূলধন কমে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় নেমে গেছে। অর্থাৎ, বাজার মূলধন হারিয়েছে ৯২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমে গেছে।

তলানিতে লেনদেনচলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ১১ কার্যদিবসে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকর ওপরে লেনদেন হয়। এর মধ্যে ১১ ফেব্রয়ারি লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তার আগের কার্যদিবস ৮ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এখন সেই লেনদেন চারশো কোটি টাকর ঘরে নেমেছে। সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার। এর মাধ্যমে শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস লেনদেন থাকলো চারশো কোটির ঘরে।

এমএএস/এমকেআর/এমএস