দেশজুড়ে

ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিলের শাস্তির দাবি

শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিলের বিচারের দাবি জানিয়েছেন জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।

Advertisement

সোমবার (২৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানান তারা। শরীয়তপুর অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (সোজা), শরীয়তপুর প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব, মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর সদস্যরা এতে অংশ নেন।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে ডামুড্যা উপজেলার খেজুরতলা এলাকায় এলজিইডির একটি রাস্তার কার্পেটিংয়ের চলমান কাজের অনিয়মের তথ্য সংগ্রহকালে দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন, বাংলা টিভির নয়ন দাস ও দ্যা ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান রনিকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল। মন্ত্রী, সচিবের সঙ্গে তার সখ্যতা আছে উল্লেখ করে সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন তিনি।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সাংবাদিকরা জানায়, খেজুরতলা এলাকার চলমান কাজে নিম্নমানের ও পুরাতন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তার কার্পেটিংয়ের বিটুমিন মেশানোর জায়গায় পুরাতন সেতুর ভাঙা পাথর দেখে উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিলকে প্রশ্ন করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। আর এতেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। একপর্যায়ে সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান ও ডেইলি স্টারের প্রতিনিধি জাহিদ হাসান রনিকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেন। তবে এ ঘটনার চারদিন পার হয়ে গেলেও উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি জেলা এলজিইডি।

Advertisement

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ বলেন, ওই ঘটনার বেশ কিছু ভিডিওচিত্র আমি দেখেছি। সেসব ভিডিওচিত্র দেখে আমার মনে হয়েছে উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। সাংবাদিকদের কখনোই হুমকি ধামকি দিয়ে দমিয়ে রাখা যায়না। আমি এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এছাড়া ঘটনার তদন্ত করে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সময় টেলিভিশনের শরীয়তপুর প্রতিনিধি বি.এম ইশ্রাফিল বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের স্বার্থে কাজ করেন। সেদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই প্রকৌশলীর আচরণ ছিল মাস্তানের মতো। তিনি সাংবাদিকদের শুধু হুমকিই দেননি, শারীরিকভাবেও লাঞ্চিত করেছেন। এ ঘটনার বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও উপজেলা প্রকৌশলীকে শোকজ পর্যন্ত করা হয়নি। অবিলম্বে ঘটনায় অভিযুক্ত উপজেলা প্রকৌশলী বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এদিকে এ ঘটনায় সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের পর থেকে প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বিভিন্ন ঠিকাদার ও অফিসের কর্মচারীদের দিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছেন বলেও জানা যায়। এ ঘটনায় রোববার (২৪ মার্চ) ডামুড্যা থাকায় একটি জিডি করেন দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজন।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি করেছেন সুজন খান নামে একজন সাংবাদিক । বিষয়টি তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী রাফেউল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিধান মজুমদার অনি/এনআইবি/এএসএম