পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। মাঝে দু’দিন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও এখন আবার টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে বাজার। ফলে পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ বেড়েই চলেছে। সেই সঙ্গে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা বাড়ছে।
Advertisement
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের দুই কার্যদিবসেই দরপতন দেখতো হলো বিনিয়োগকারীদের।
এর আগে টানা ৮ কার্যদিবস দরপতন হওয়ার পর গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তার আগেও শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হয়। সবমিলিয়ে শেষ ২৮ কার্যদিবসের মধ্যে ২৩ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে।
এমন পতনের মধ্যে থাকা বাজারে সোমবার লেনদেন শুরু হতেই বিক্রির চাপ বাড়ান এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী। ফলে লেনদেন শুরু হতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বিক্রির চাপ। এতে সূচকের পতনের মাত্রাও বাড়তে থাকে।
Advertisement
লেনদেনের শেষদিকে এই প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে গড়পড়তা দরপতন হয় সব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৪১টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১৮টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৩৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৮০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ১৯ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
Advertisement
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেস্ট হোল্ডিং, গোল্ডেন সন, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহিনপুকুর সিরামিকস, ফু-ওয়াং সিরামিক, ওরিয়ন ফার্মা এবং মালেক স্পিনিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৭টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/এএসএম